০২ জুন ২০২৪, রবিবার



তামাকে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে ৪৪২ মানুষ

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৮:০৯ পিএম
তামাকে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে ৪৪২ মানুষ


বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংসদ সদস্য লুৎফুন্নেসা খান। তিনি বলেন,‘প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন গড়ে ৪৪২ জন। এই অকাল মৃত্যু রোধে চলতি সংসদেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া পাস করাতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান। 

লুৎফুন ন্নেসা খান বলেন, ‘বাংলাদেশে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।  তামাকের পাশাপাশি জর্দা, গুল, সাদাপাতার মতো তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারের কারণে নারীরা মুখের ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকসহ অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া তামাকের কারণে গর্ভবতীদের গর্ভপাত হচ্ছে, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মায়ের মৃত্যুও হচ্ছে। এজন্য নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করাতে হবে। 

স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জনাব মো. আব্দুস সালাম মিয়া, প্রোগ্রামস ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে)। 

স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- শিখা চক্রবর্তী (ওয়ার্ড নং-৬, ৭, ৮), নাজমুন নাহার হেলেন, (ওয়ার্ড নং ২৪, ২৫, ৩৫), হামিদা আক্তার মিতা, (ওয়ার্ড নং ২৬, ২৭, ২৮) এবং শাহিন আক্তার সাথী, (ওয়ার্ড নং ২৯, ৩০, ৩২)।  

নারী মৈত্রীর তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমম্বয়কারী নাসরিন আক্তার জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধিত খসড়াতে ধুমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ ও সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কবার্তার পরিসর ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আইনটিকে আরও শক্তিশালী করবে। ফলে তামাকের কারণে একদিকে যেমন মৃত্যুহার কমবে অন্যদিকে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটবে। 

সিটিএফকে এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, ‘করোনায় গত ৩ বছরে বাংলাদেশে ৩০ হাজার মানুষ মারা গেছে। অথচ তামাকের কারণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছেন ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ। তামাকের কারণে মৃত্যু ধীরে ধীরে ঘটে বলে সেটি কারো চোখে পড়ে না। অথচ এটি করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর। শুধু তাই নয়, তামাকের কারণে প্রতিবছর সরকারের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এমন পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার দাবি, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী যাতে চলতি সংসদেই পাস করুন, সাধারণ মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করুন।’ 

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, ‘আইনটি দ্রুত পাসের মাধ্যমে শক্তিশালী করা গেলে নারী ও শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নাগরিকদের তামাক পণ্য ব্যবহারের সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে ’

ঢাকা বিজনেস/এমএ/



আরো পড়ুন