নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ‘হযরত বিবি খাদিজা হলে’ ৫ শতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থীর বসবাস। নিত্যদিনের ক্লাস,পরীক্ষা,ল্যাবের ব্যস্ততার মাঝে পানি সংকটে ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধানে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে হলের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিনিয়তই সকাল থেকে দুপুর, বিকাল, কোনো কোনো দিন সারাদিনই পানি থাকে না। এই বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও নেয়নি কোনো যথাযথ পদক্ষেপ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন যাবত পানির সমস্যায় ভোগান্তিতে আমাদের হলের শিক্ষার্থীরা। পানি আমাদের মৌলিক চাহিদা হলেও মাঝেমধ্যেই ওয়াশরুমে পানি থাকে না, কখনো আবার খাবার পানি থাকে না। গোসলে গিয়ে আটকা পড়তে হয়, পানির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। আমাদের ওয়াশরুম ও গোসল করার জন্য এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে ছুটতে হয় পানির জন্য। বেশ কয়েকবার এই নিয়ে অভিযোগের পরেও এর কোনো স্থায়ী সমাধান মেলেনি।’
হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পানির সমস্যায় অতিষ্ট আমরা। প্রতিনিয়তই খাবার পানি, ওজু, গোসল, টয়লেটসহ দৈনন্দিন কাজে পানি সংকটে ভুগছি। বাথরুমে পানি ঠিকমতো না থাকা, বেসিনের ও ট্যাপের পানি সরবরাহে ধীরগতিসহ বিভিন্ন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা হলেও এই বিষয়ে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। এর শেষ সমাধান কোথায়?’
প্রভোস্ট ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ না থাকায় এই সমস্যা হয়েছে বিদ্যুৎ আসার পরে পানি সরবরাহ করা হয়েছে।’ এর আগেও একাধিকবার পানি না থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের হলে পানি আসে সব ভবন ও হলে পানি আসার পর। ফলে অনেক সময় দেখা যায় হলের পেছনের ব্লকে পানি থাকে না। এখন যদি পানির নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ দিতে হয়, তাহলে নতুন করে পাইপলাইন বসাতে হবে, যেটা আমার হাতে নেই। এই বিষয়ে ডিপিডি বলতে পারবে। আমরাও চাই এই সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হোক।’
এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) মো. সৈয়দ আহমেদ বলেন, ‘আমরা হল থেকে এই বিষয়ে চিঠি পেয়েছি। পানির পাইপলাইন ঠিক আছে তবে আমাদের কিছু মোটর নষ্ট হয়ে গেছে, যার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হলে আরও কিছু মোটর সংযুক্ত করতে হবে যা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) শান্তু মজুমদার জানান, ‘এটা শুধু বিবি খাদিজা হলের সমস্যা না পুরো ক্যাম্পাসই পানি সংকট। সাধারণত প্রতিদিন ৭০ লাখ লিটার পানির চাহিদা থাকলেও আমরা সরবরাহ করতে পারি মাত্র ৩০-৩৫ লাখ লিটার। এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতি হলে আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভ ট্যাংক বানাতে হবে। আমাদের কাছে আরও কিছু পরিকল্পনা আছে যা নিয়ে আমরা আগামীকাল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসবো।’