১৮ মে ২০২৪, শনিবার



‘বাংলাদেশে বন্যপ্রাণীর ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার || ১৮ আগস্ট, ২০২৩, ০৭:০৮ পিএম
‘বাংলাদেশে বন্যপ্রাণীর ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও সাপ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের উদ্যেগে ‘বাংলাদেশে বন্যপ্রাণীর ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক সেমিনার  অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এ আর মল্লিক লেকচার হলে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মো. আলী রেজা খান বলেন,  ‘দেশ থেকে ইতোমধ্যে ঘড়িয়াল, মিঠা পানির কুমির, বালি হাস ইত্যাদির প্রাকৃতিক আবাস ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে এসব বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পঞ্চাশের দশকেও শালবনে ছিল বাঘ, অতীতে সেখানে হাতি, চিতা, এমনকি গণ্ডারের রেকর্ডও রয়েছে। বর্তমানে গোটা দেশেই ভাল্লুক-চিতা এসব দূর্লভ। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, শৃলঙ্কায় প্রাকৃতিক বন রক্ষা করা ও বনায়ন বাড়ানো হচ্ছে ফলে বন্যপ্রাণীরা টিকতে পাচ্ছে। এদিকে আমাদের এমনকি গ্রামাঞ্চলেও আজকাল বট-শিমুল-হিজল এসব উঁচু গাছ এখন কমে আসছে। ফলে পাখির আবাসও কমছে। আমাদের অন্তত মাথায় রাখতে হবে যাতে বর্তমানে যেসব বন্যপ্রাণী আছে সেসব যেন কমে না যায়। বন-ও প্রাণী রক্ষার সমস্ত সংস্থার দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত পরিকল্পনা এবং কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে তা করা যেতে পারে। বনায়নে দেশীয় ফলজ গাছ রোপণের অভ্যাস করতে হবে। প্রাকৃতিক বন রক্ষায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রাকৃতিক বনের প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র কখনওই কৃত্তিম বনায়নে সম্ভব নয়।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য-শিক্ষা অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘১৯৭৪ সালে প্রথম বন্যপ্রাণী আইন প্রণয়ন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দূর্ভাগ্যক্রমে পরবর্তী দুই দশকে এই আইন তেমন কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। তবে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপন ও পরিকল্পিত বনায়ন রক্ষায় পাখির প্রজাতি ও আবাস বাড়াতে পেরেছি। দেশের বন ও প্রকৃতি রক্ষার মাধ্যমেই বন্যপ্রাণীদের আবাস রক্ষা করতে পারলেই বন্যপ্রাণীদের ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে আমরা আশাবাদী হতে পারব।

ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘প্রাণী ও বন রক্ষা করতে না পারলে দেশের সার্বিক প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে না। বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ আবাস নিশ্চিত করতে সরকারি কার্যক্রম এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের বিকল্প নেই।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, ‘দেশের মিশ্র সবুজ বন, শালবন, পার্বত্য অঞ্চলের বনাঞ্চল অতি দ্রুত ধ্বংস হয়ে গেছে। বন্যপ্রাণীর আবাস কমে আসছে। প্রকৃতি রক্ষা করতে বন্যপ্রাণীদের আবাসঞ্চল বৃদ্ধি এবং সেগুলো প্রকৃত অর্থেই রক্ষা করতে না পারলে প্রাণীদের ভবিষ্যৎ সংকটাপূর্ণ। সরকারিভাবে যথাযথ পরিকল্পনা, পদক্ষেপ এবং সাধারণ জনগণকে বন্যপ্রাণীর উপকারিতা, পরিবেশে তাদের ভূমিকার ব্যাপারে অবহিত করতে হবে।

সেমিনারে অন্যান্য মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রাণিপ্রেমী, প্রাণী গবেষক, বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রিশিল্পী-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রাণিবিদ্যার শিক্ষার্থী ও গবেষকবৃন্দ।

ঢাকা বিজনেস/এমএ/



আরো পড়ুন