খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ভবনের ছাদে স্থাপিত সোলার প্যানেল থেকে ১১৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। আগামী এক মাসের মধ্যেই উৎপাদনে আসছে সোলার প্যানেল। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের অর্থ হ্রাস পাবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, দেশের লোডশেডিং ও জ্বালানি সংকটের এই সময়ে এমন পরিবেশবান্ধব অর্জন অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে এ বিশ্ববিদ্যালয়।
জানা যায়, নিজস্ব সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে সুপার স্টার রিনিউঅ্যাবল এনার্জি লিমিটেডের সঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ৯৭ হাজার ২৫৬ টাকা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্বাক্ষরিত এমওইউ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ প্রশাসনিক ভবন ও মাইকেল মধুসূদন দত্ত অতিথি ভবনের ছাদে মোট ২১৬টি সোলার প্যানেল বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যা থেকে আগামী একমাসের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এই সৌর প্যানেলের আয়ুষ্কাল ২৫ বছর। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসিক ৭০০-৮০০ কিলোওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। উৎপাদিত সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি থাকবে না। আর এটি ব্যবহারে আর্থিক সাশ্রয়ও হবে।’
অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) প্রকল্প পরিচালক ড. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ৩০০ কিলোওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল ও অন্যান্য বড় স্থাপনার ছাদেও সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করারও পরিকল্পনা রয়েছে।’
এবিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মতো চরম সমস্যা থেকে বাঁচতে সৌর বিদ্যুৎ অনেক কার্যকরী উপায়। তাছাড়া বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে দেশে সৃষ্ট লোডশেডিংয়ের এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে সৌর বিদ্যুৎ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা যেনো সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষকরা গবেষণাকাজ নির্বিঘ্নে করতে পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উৎপাদিত এ সৌরবিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। নিজেদের চাহিদা পূরণের পর উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে।’
উপাচার্য বলেন, ‘স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে গ্রিন এনার্জি উৎপাদনের ওপর যে গুরুত্বারোপ করেছেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে লক্ষ্যে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সে বিষয়গুলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এই গ্রিন এনার্জি উৎপাদনে সক্ষম হবে।’
ঢাকা বিজনেস/এইচ