অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল অতিক্রম করার পর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত থেকে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। রোববার (১৪ মে) রাত ৮টা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে মোখার কারণে কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছিল বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও সামান্য দুর্বল হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আজ বিকেল ৩টায় মিয়ানমারের সিটুয়ের নিকট দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে দেশটির স্থলভাগের ওপর অবস্থান করছে। বর্তমানে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। স্থলভাগে এটি বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যাবে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ আজ সকাল ৬টায় বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করে। পরে বিকেল ৩টায় ঘূর্ণিঝড়ের মূলকেন্দ্র স্থলভাগে ওঠে। সন্ধ্যা ৬টায় পুরোপুরি বাংলাদেশের স্থলভাগ অতিক্রম করে।
এদিকে, বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন প্রদেশে আছড়ে পড়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মিয়ানমারে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন।
মিয়ানমারের উপকূলে শক্তিশালী এই ঝড়ের তাণ্ডব থেকে বাঁচতে হাজার হাজার মানুষ মঠ, প্যাগোডা এবং স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) বলেছে, রাখাইনে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে অনেক ভবনের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে।
মোখা'র তাণ্ডবে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ সেন্টমার্টিন, শাহপরীরদ্বীপ, বাহারছড়া, হ্নীলা হোয়াইক্ষ্যং উখিয়া পালংখালী ও জালিয়াপালং এলাকার প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো।
শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ। সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে গেছে সেন্টমার্টিনের একাংশ। ঘরবাড়ি, গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উপড়ে গেছে। এ সময় সেন্টমার্টিনে গাছ পড়ে ২জন নারী-পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই। রবিবার (১৪ মে) দুপুরের দিকে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।
ঢাকা বিজনেস/এইচ