২৬ জুন ২০২৪, বুধবার
গাইবান্ধার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকরা রোপণ করেছেন রোবো ধানের চারা। ইতোমধ্যে সবুজ হয়ে উঠছে ক্ষেত। অধিক ফলন ঘরে তোলার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে ক্ষেত পরিচর্যাসহ সার প্রয়োগ। পোকার আক্রমণে যেন ফসলের ক্ষতি না হয়, সেজন্যে পার্চিং বা গাছের ডাল বা কঞ্চি পুঁতে পাখি বসার জায়গা বানানো হচ্ছে। যাতে ক্ষতিকারক পোকা দমন করতে পারে পাখিরা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, পার্চিং তৈরি করে দিলে পাখিরাই ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে ধানকে রক্ষা করবে, কৃষকের সাশ্রয় হবে টাকা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার কৃষকের মাঠে দেখা গেছে, পার্চিং বসানোর চিত্র। এরই মধ্যে একদল পাখি উড়ে এসে বসেছে এই পার্চিংয়ে। ওঁৎপেতে এসব পাখি দমন করছে ক্ষতিকারক পোকা। যার কারণে ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বোরো ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে পার্চিং পদ্ধতি একটি সফল প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে সহজে ক্ষতিকারক পোকা নিধন ও আর্থিক সাশ্রয় হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এই পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে। এতে কীটনাশক ছিঁটিয়ে পোকা দমনের প্রয়োজন হয় না। এখন প্রকৃতির মুক্ত পরিবেশে উড়ন্ত পাখি যেন কৃষকের পরম বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কৃষক মতাজ উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার বিদ্যুৎ-ডিজেল ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বোরো চাষে খরচ বেশি হচ্ছে তার। তাই কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কীটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং স্থাপনের মাধ্যমে পাখি দিয়ে পোকামাকড় দমন করছেন।
খাজানুর প্রামাণিক নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জমিতে পোঁতা পার্চিংয়ে বসে বসে পাখিরা পোকা খায়। এতে করে ফসল ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে। তেমনি আর্থিক সাশ্রয়ও হচ্ছে।’
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বলেন, ‘মাজরা পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। একদম পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। এ নিয়ে কৃষকদের আগ্রহী করে তোলা হচ্ছে।’
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, ‘চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এই আবাদে কৃষকদের লাভবান করতে ইতোমধ্যে প্রণোদনা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং ব্যবহারসহ কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।’
ঢাকা বিজনেস/এম
