২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



যে-কৌশলে সৈকতের পর্যটকদের সরালো প্রশাসন

তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজার || ২৮ মে, ২০২৪, ১০:০৫ এএম
যে-কৌশলে সৈকতের পর্যটকদের সরালো প্রশাসন


ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে কক্সাবাজার সমুদ্র সৈকতসহ সারাদেশে। এই সময় ভয়ঙ্কর সব ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকত। আর তখনো গোসল করছিলেন অনেক পর্যটক। মাইকিং করার পরেও তাদের সরানো যাচ্ছিল না। এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির এক পর্যায়ে পর্যটকের জীবন রক্ষায় ‘লাঠি হাতে তুলে নেন’ সৈকতের লাইফ গার্ডকর্মীরা।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূল দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এর আগে থেকেই পর্যটকদের একটা অংশ সৈকতে ভিড় করতে থাকেন।  

সোমবার (২৭ মে) বেলা ১১টার দিকে জোয়ার আসে। ভয়ঙ্কর সব ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে সৈকতে।  এমন পরিস্থিতিতেও পর্যটকদের সমুদ্রস্নান থেকে বিরত রাখা যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. মাসুদ রানা। তিনি বলেন, ‘গত দুই দিন পর্যটকদের কাছে সব ধরনের অনুরোধই করা হয়। বারবার অনুরোধ করেছি, সমুদ্রস্নান থেকে বিরত থাকুন, পানি থেকে উঠে যান। কিন্তু জলোচ্ছ্বাসের সর্বোচ্চ সীমার মাঝেও পর্যটকরা সমুদ্রস্নানে নামছিলেন। তাদের জীবন রক্ষায় আমাদের শক্তি প্রয়োগ করা ছাড়া কিছু করার ছিল না। তারপরও বারবার অনুরোধ করছি। কিন্তু কোনো কিছুই মানতে চান না এই ভ্রমণপিপাসুরা।’

১৫ গ্রাম প্লাবিত বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে কক্সবাজারের অন্তত ১৫ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। এর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরাটেক, কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, মোস্তাকপাড়া, ফদনার ডেইল, নুনিয়ারছড়া, মহেশখালী উপজেলার ধলাঘাটা ও মাতারবাড়ি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু এলাকা। এসব এলাকার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন। শতাধিক দোকান ক্ষতিগ্রস্ত ঝড়ো হওয়ায় কক্সবাজার সৈকতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক দোকান উপড়ে গেছে বেশ কিছু ঝাউ গাছ।

সৈকতের লাবণী পয়েন্টের চায়ের দোকানদার সবুজ বলেন, ‘আমার দোকানের ছাউনি বাতাসে উড়ে গেছে। পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট উড়ে কোথায় গেছে জানি না।’ 

শামুক-ঝিনুকের ব্যবসায়ী আবু বলেন, ‘ত্রিপলি ও রশি দিয়ে মালামাল বেঁধে ছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসে সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ২০ হাজার টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে।’

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, ‘রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে ৯৩ মিলিমিটার। একই ধরনের বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।’

পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদে আশ্রয় নিতে প্রচার চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান জানান, ঝুঁকিপূর্ণদের নিরাপদে আশ্রয় নিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জনপ্রতিনিধি কাজ করছেন। প্রয়োজনে জোর করে তাদের সরানো হবে।

/ঢাকা বিজনেস/




আরো পড়ুন