১৮ মে ২০২৪, শনিবার



ক্যাম্পাস
প্রিন্ট

বসন্ত দিনে তাদের ভালোবাসা

হাবিবুর রহমান || ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ০৩:৩২ পিএম
বসন্ত দিনে তাদের ভালোবাসা


‘একে তো ফাগুনের আগুন তার ওপর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। দুটি উৎসব এক হয়ে হৃদয়ে দোলা দিয়েছে খুব বেশি। বসন্তকে বরণ করে নিতে বাঙালি আয়োজন করে মেলা, সার্কাসসহ নানা উৎসব। আমি ছোটবেলা থেকেই মেলায় যেতাম বাবার সঙ্গে। মেলায় সার্কাস দেখতাম। বাবা আমার পছন্দের টমটম গাড়ি, ঝুড়ি, জিলাপি কিনে দিতেন। সেগুলো নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা সবসময় মনে পড়ে।’ এভাবেই বলছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাগর হোসেন।

কবির ভাষায়- ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত’। কিন্তু সত্যি বলতে আজ ফুল ফুটেছে, বসন্ত ঋতুও হাজির হয়েছে। তাকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতি তার সব রুক্ষ, শুষ্কতা দূর করে সতেজ, প্রাণখোলা রূপ ধারণ করেছে। শিমুল, পলাশের সমারোহ, দখিনা হাওয়া, মৌমাছির গুঞ্জন, কচি-কিশলয় আর কোকিলের কুহুতান জানান দেয় আজ পহেলা ফাল্গুন। এদিকে, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাসন্তী দিনে ভালোবাসা নিয়ে কে কী ভাবছেন, তা লিখে পাঠিয়েন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান।

মুর্শিদা ইসলাম

ঘুম ভাঙতে না ভাঙতেই শুনলাম কোকিলের ডাক। পাশের জানালাটা খুলে দিতেই দক্ষিণা হাওয়া অন্তরে প্রশান্তি এনে দিলো। আর একটু জানালার দিকে এগুতেই দেখলাম পাশের শিমুল গাছটায় রক্তিম বর্ণে ভরে আছে। তাতে শালিকের আনাগোনা। বুঝতে বাকি রইল না প্রকৃতিতে ঋতুরাজের উপস্থিতি। মনে পড়লো কবিতার দুটো লাইন-‘বাতাসে বহিছে প্রেম নয়নে লাগিল নেশা/ কারা যে ডাকিল পিছে- বসন্ত এসে গেছে...!’ হ্যাঁ, বসন্ত এসে গেছে। আমিও স্বাগত জানালাম ঋতুরাজকে।

মিম তাহমিম

এ বছর এখনো প্রকৃতিতে শীতের কিছু আমেজ রয়ে গেছে। তবুও আড়মোড়া ভেঙে ধীরে ধীরে নতুন সাজে সেজেছে প্রকৃতি। বাংলার প্রকৃতি, আমাদের ভাষা, সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বড় অংশ দখল করে আছে ঋতুরাজ বসন্ত। তাই বসন্তকে সাদরে বরণ করে সবাই। আমিও ব্যতিক্রম নই। বসন্তের লালচে শিমুল ও পলাশ ফুল আমার মনে সৃষ্টি করে এক অন্য রকম দোলা। আর এই আমেজে আমাকে আরও অভিভূত করেছিল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। বরাবরের মতো এ বছরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের আয়োজনে উদযাপিত হবে বসন্ত বরণ। আমিও অংশগ্রহণ করবো তাতে। ঋতুরাজকে আরও বেশি কাছ থেকে বরণ করবো। 

মোহাম্মদ নাছরুল হক

ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণনা কোনো রঙ-তুলির আঁচড়ে শেষ হয় না। কোনো কবি-সাহিত্যিক বসন্তের রূপের বর্ণনায় নিজেকে তৃপ্ত করতে পারেন না। তবুও বসন্ত বন্দনায় প্রকৃতিপ্রেমীদের চেষ্টার যেন অন্ত থাকে না। আমিও সে রকম একজন মানুষ। বসন্তকে নিজের মতো পালন করি। বসন্ত আমার আবেগের ঋতু। এখন তো ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত একসঙ্গে উদযাপন হয়। বাবা-মায়ের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েই ভালোবাসার শুভেচ্ছাটা তাদের জন্যই বেশি থাকে। পরে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমেই কাটে আমার ফাল্গুন। তবে এই ঋতুরাজ আমার আরও বেশি প্রাণবন্ত হবে, যদি একান্ত কাছের শূচি নামক বিরল প্রাণীটি অনুভূতি বোঝে।

আম্মায় আছিফুন মিম

বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই নতুন প্রাণের কলরব। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও লাগে দোলা। বিপুল তরঙ্গ প্রাণে আন্দোলিত হবে বাঙালি মন। বসন্ত বরণে দূর থেকে চেয়ে থাকবার মতো তরুণীটি আজ বেরিয়েছে বাসন্তী শাড়িতে। জমাট খোঁপাটি তার হলুদ গাঁদায় মোড়া। দুই হাতভর্তি কাচের চুড়ি। কাছে যেতে হয় না, সাত সমুদ্র তেরো নদীর এপার থেকেও ঝনঝন শব্দ ঠিক বুকে বাজে। তাকে হাত ধরে রাস্তা পার করে হৃদয়পুরের দিকে নিয়ে যাওয়া তরুণের পরনে লাল, অন্য হাতে তার ফুলভর্তি গোটা বাগান। চারদিকে কুহু ডাকে বিভোর করে তোলে বসন্ত কোকিল।

অনিল কুমার

বসন্ত এলেই প্রকৃতিতে ভালোবাসার সঞ্চার হয়। উড়ু উড়ু ভাব জাগে মনে। দূর দিগন্তে হারিয়ে যাওয়ার ঘোর বিভোর করে। আমার মতে, ভালোবাসা কবিতার মতো, ভালোবাসা শিল্পীর ছবির মতো, ভালোবাসা সংগীতের সুরের মতো, ভালোবাসা কোকিলের কুহু ডাকের মতো, ভালোবাসা সত্যিকারের প্রেমিক ও প্রেমিকার কল্পনার মতো। ভালোবাসার কোনো অতীতকাল নেই। ভালোবাসা সবসময় বর্তমান। প্রত্যেকটি ভালোবাসাই পবিত্র। এই বসন্তে প্রিয় মানুষ কাছে থাকুক, আরও বেশি ভালোবাসুক, সেই প্রত্যাশাই করি।

ঢাকা বিজনেস/এম



আরো পড়ুন