২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



যে মেলার নাম ‘ডুবের মেলা’

আব্দুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইল || ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৬:০২ পিএম
যে মেলার নাম ‘ডুবের মেলা’


টাঙ্গাইলের বাসাইল কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সৈয়দামপুর গ্রামে বংশাই নদীতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো  ডুবের মেলা। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ডুবের মেলা যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে। মাঘী পূর্ণিমায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। যা মানুষের মুখে মুখে ডুবের মেলা নামে পরিচিত। স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই মেলায় নদীতে পুণ্যস্নান করলে পাপমোচন হয়। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী এই ডুবের মেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ 

সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলায়  বিভিন্ন স্থান থেকে আগত জনগণ পূজা ও স্নানপর্বে অংশ নেয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে স্নান উৎসব। নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরী ম্নান উৎসবে অংশ নেন। তারা জমির আইল ধরে ডুবের মেলা আসেন। 

স্নান উৎসবে অংশ নেওয়া পুণ্যার্থীরা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পাপ মোচন উপলক্ষে ভোরে মানত ও গঙ্গাস্নান পর্ব সমাপণ করেন। গঙ্গাস্নান করলে সাড়া বছরের পাপ মোচন হয়। মনের আশা ও বাসনা পূরণ হয়। এই স্নান অংশ নিলে পুণ্য মেলে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসে গঙ্গাস্নানে অংশ নিয়ে তাদের মনের বাসনা পূরণ করেন।

এই মেলা ব্রিটিশ শাসনামলে বক্ত সাধু নামে খ্যাত এই সন্যাসীর (মাদব ঠাকুর) মূর্তি প্রতিস্থাপন করে পূজা অর্চনা শুরু করেন। এই পূজা উপলক্ষে তখন থেকে গঙ্গাস্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তখন থেকে এটা ডুবের মেলা নামে পরিচিত। ডুবের মেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ম্নান উৎসব চলে।  

স্নানে অংশ নেওয়া সুজন সরকার বলেন, ‘আজকে আমরা মাঘী পূর্ণিমার মেলায় এসেছি। আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি পুণ্য স্থান। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গঙ্গাস্নান হয়। ১০০ বছর ধরে এই গঙ্গাস্নান চলে আসছে। ডুবের মেলায় যারা আসে তারা মনের বাসনা নিয়ে গঙ্গাস্নান করতে আসেন। গঙ্গাস্নান করলে মনের বাসনা পূরণ হয়।’

স্নানে অংশ গ্রহণ করতে আসা দেবাশীষ দাস বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করে, আজকে এই মাঘীপূর্ণিমার তিথিতে উত্তরবাহিত জলে স্নান করলে সারাবছরের পাপমোচন হয়। অনেকের মনে আশা থাকে, স্নান করলে তাদের মনের আশা পূরণ হবে।’

মিষ্টি বিক্রেতা মেহেদী হাসান বলেন, ‘৩০ বছর ধরে এই মেলায় আসি। মেলায় ভালোই মিষ্টি বিক্রি হয়। মেলায় ৯ থেকে ১০ মণ মিষ্টি বিক্রি করা যায়। মেলায় অনেক লোকের সমাগম হয়।’

পুরোহিত রবিন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘পূর্ব-পুরুষ থেকে এই গঙ্গাস্নান শুরু হয়েছে। এই গঙ্গাস্নানকে বলে মাঘীপূর্ণিমার গঙ্গাস্নান। ৩০-৪০ জন পুরোহিত এই গঙ্গাস্নানে এসেছেন। দূর-দুরান্ত থেকে লোকজন এসেছেন গঙ্গাস্নানে অংশ নেন। পুণ্যার্থীরা তাদের মনের বাসনা নিয়ে এখানে আসেন। তারা ডুব দিলে তাদের মনের বাসনা পূর্ণ হয়।’

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আল মামুন বলেন, ‘পূর্ব-পুরুষ থেকেই এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মাঘীপূর্ণিমায় ডুবের মেলা পালন করে থাকেন। মেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসেন।’

/ঢাকা বিজনেস/



আরো পড়ুন