ভারতের একজন অন্যতম নারী ব্যবসায়ী সাবিত্রী জিন্দাল। সংসার সামলানোর ফাঁকে ব্যবসায় পা রাখলেও চোখে পড়ার মতো উত্থান হয়েছিল সাবিত্রীর।
২০২০ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত তাঁর মোট সম্পত্তি তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ছিল চোখে পড়ার মতো।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এক পত্রিকায় প্রকাশিত ধনী ভারতীয়দের তালিকার প্রথম ১০-এ একমাত্র নারী প্রতিনিধি ছিলেন সাবিত্রীই।
আনন্দবাজার বলেছে, ২০২৩ সালে সাবিত্রীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৯৬০ কোটি ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপরীতে, রিলায়েন্স গোষ্ঠীর কর্তা মুকেশের সম্পত্তি বেড়েছে ৫০০ কোটি ডলার। যদিও ভারতের সবচেয়ে ধনীর তকমা রয়েছে আম্বানির কাছেই।
সাবিত্রীর স্বামী ছিলেন ভারতের ইস্পাত সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি ওম প্রকাশ জিন্দাল। প্রাচুর্যে ভরপুর সংসারে মধ্য পঞ্চাশের সাবিত্রীর জীবন কাটছিল বেশ নিশ্চিন্তে। ৯ সন্তানকে নিয়ে বেশ নিশ্চিন্তেই সংসার সামলাতেন সাবিত্রী। কিন্তু ২০০৫ সালে আচমকা বড়সড় ঝাঁকুনিতে থমকে যায় জীবন। সে বছর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর স্বামী তথা শিল্পপতি ওম প্রকাশের। দুর্ঘটনায় ওম প্রকাশের অকস্মাৎ মৃত্যুর পর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে হয়েছিল সাবিত্রীকে। অথচ এমনটা যে করতে হবে, কল্পনাও করেননি তিনি।
স্বামীর অকালপ্রয়াণের পর ভেঙে পড়েননি সাবিত্রী। ও পি গোষ্ঠীর দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন। যে বয়সে নিশ্চিন্তে সংসার করেন অধিকাংশ নারী, সেই বয়সে ব্যবসার খুঁটিনাটি শিখতে হয়েছিল তাঁকে। তখন সাবিত্রীর বয়স ছিল ৫৫। সাবিত্রী বর্তমানে ও পি জিন্দল গোষ্ঠীর চেয়ারপার্সন এমিরেটা। গত দুই বছরে তাঁর হাত ধরেই এই গোষ্ঠীর প্রসার হয়েছে।
একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর বিখ্যাত উক্তি ছিল, ‘আমরা মেয়েরা ঘরের চৌহদ্দি সামলাবো। আর পুরুষরা বাইরের জগতের সব কিছু দেখাশোনা করবে।’ তবে এক সময় তাঁকেই ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে বাইরের জগৎ সামলাতে হয়েছিল।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ব্যবসার পাশাপাশি স্বামীর মতো রাজনীতির আঙিনায়ও পা রেখেছেন সাবিত্রী। ২০০৫ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর কেন্দ্র থেকেই নির্বাচনে দাঁড়ান। কংগ্রেসের টিকিটে সেই কেন্দ্রে জয়ী হয়ে পা রাখেন হরিয়ানা বিধানসভায়। পরের বিধানসভা নির্বাচনে আবারও জয় পান তিনি। ২০১৩ সালে হরিয়ানার ক্যাবিনেট মন্ত্রীও হয়েছিলেন সাবিত্রী। সাবিত্রীর আসল সাফল্য ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে, রাজনীতিক নয়।