নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পাবনার আটঘরিয়ার দেবোত্তর বাজারে হরেক রকমের পিঠা উৎসব হয়েছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে এই পিঠার মেলা হয়। অষ্টমবারের মতো এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করে হ্যাপী টেকনোলোজি পরিবার। যেখানে নানান স্বাদের প্রায় ৪০০ রকমের পিঠা নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন গৃহিণী, শিক্ষার্থীসহ অনেকে।
টেবিলে প্লেটে থরে থরে সাজানো ছিল নানা রঙের পিঠা। পাকান, ভাঁপা, পুলি, চিতই, পাটিশাপটা, নকশি পিঠা, ফুল পিঠা, মালপোয়া, রস পাকনসহ নাম না জানা হরেক রকম পিঠা। এ যেন রসের মেলা। নানা স্বাদের এসব পিঠা দেখলেই মুখে জল চলে আসবে যে কারো।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা রকম পিঠা। যান্ত্রিক জীবনে নতুন প্রজন্মের অনেকে জানেন না এসব পিঠার নাম। গ্রাম-বাংলার বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী খাবার ধরে রাখা ও নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসব।
ফিতা কেটে পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম রতন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাকসুদা আক্তার মাশু, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার জহুরুল ইসলাম, আটঘরিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন, আটঘরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি খাইরুল ইসলাম বাসিদ। পরে অতিথিরা পিঠার স্টল ঘুরে দেখেন।
উৎসবে বাহারি সব পিঠা দেখে মুগ্ধ হন নানা বয়সী দর্শনার্থী। গৃহবধূ সাবিনা খাতুন, শিক্ষার্থী রাইশা খাতুন জানান, উৎসবে এসে তারা নতুন নতুন পিঠার নাম জানতে পারেন। বাড়িতে গিয়ে ওইসব পিঠা বানানোর চেষ্টা করবেন। এভাবেই গ্রাম-বাংলার পিঠার ঐতিহ্যকে ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তারা।
বিভিন্ন নামের পিঠা তৈরি করে উৎসবে অংশ নেন গৃহিণী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণকারী আনিকা খাতুন বলেন, প্রতিবছর আমি এই পিঠা উৎসবে অংশ নেই। এবারও নিজেই সর্বোচ্চ ৬৫ রকমের পিঠা নিয়ে উৎসবে অংশ নিয়েছি। প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত আমি।
উৎসবের আয়োজক দেবোত্তর বাজারের হ্যাপি টেকনোলোজির পরিচালক আবু সাইদ বলেন, বিলুপ্তপ্রায় নাম না জানা পিঠাগুলো নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করে দিতে ও গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এমন আয়োজন। অষ্টমবারের মতো এবার আয়োজন হলো। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাকসুদা আক্তার মাশু বলেন, এমন সুন্দর আয়োজন সত্যি ভালোলাগার মতো। গ্রামীণ এই ঐতিহ্যকে আমাদের সবাইকে ধরে রাখতে হবে। এ জন্য আগামীতে আরও বড় পরিসরে এমন আয়োজনে পাশে থাকবে উপজেলা প্রশাসন।
আটঘরিয়া পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, শীতের সময়ে গ্রামের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী খাবার এই পিঠা। বিদেশি খাবারের দিকে ঝুঁকছে নতুন প্রজন্ম। তাই গ্রাম-বাংলার সুস্বাদু খাবার পিঠাকে ধরে রাখতে এমন আয়োজন আরও বেশি বেশি হওয়া দরকার।
ঢাকা বিজনেস/এম