১৮ মে ২০২৪, শনিবার



কেমন ছিল বিদায়ী সপ্তাহের শেয়ারবাজার

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ০৪ আগস্ট, ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম
কেমন ছিল বিদায়ী সপ্তাহের শেয়ারবাজার


বিদায়ী সপ্তাহে (৩০ জুলাই-৩ আগস্ট) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট লেনদেন ও সবগুলো সূচক নিম্নমুখী ছিল বলে সংস্থাটির ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে।  এই সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৯৬৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিলো ৩ হাজার ২৫৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মোট লেনদেন কমেছে ২৯২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমেছে।

বিদায়ী সপ্তাহে প্রত্যেকদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৯২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছিল ৬৫১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন কমেছে ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ডিএসই’র পি/ই রেশিও কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে পি/ই রেশিও ছিল ১৪ দশমিক ৪২। আর বিদায়ী সপ্তাহে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৪৪। বিদায়ী সপ্তাহে মোট ৪০৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছিল। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন বেড়েছে ৭৬টির, কমেছে ৯৬টির, অপরিবর্তিত ছিল ২১৬টির। ১৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশগ্রহণ করেনি।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে ছিলো ৬ হাজার ৩৩৯ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। আর বিদায়ী সপ্তাহে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩২৯ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক কমেছে ৯ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। অর্থাৎ ০ দশমিক ১৫ শতাংশ কমেছে। ডিএসইএক্স শরিয়াহ্ সূচক (ডিএসইএস) গত সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৩৭৩ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট। আর বিদায়ী সপ্তাহে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৭২ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক কমেছে ১ দশমিক ০৩ পয়েন্ট। অর্থাৎ ০ দশমিক ০৭ শতাংশ কমেছে। আর ডিএসই৩০ সূচক (ডিএস৩০) কমেছে ৭ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট। অর্থাৎ ০ দশমিক ৩৪ শতাংশ সূচক কমেছে। গত সপ্তাহে এই সূচক ছিলো ২ হাজার ১৫৯ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। আর বিদায়ী সপ্তাহে তা এসে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫২ দশমিক ৫২ পয়েন্ট। তবে সেল প্রেশার বেশি থাকায় বাজার মূলধন কিছুটা বেড়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৯৮ কোটি ৮২ লাখ ৯৯ হাজার ২৩৮ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন এসে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩৭০ কোটি ৫৩ লাখ ৯০ হাজার ৪২৬ টাকা। এক্ষেত্রে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১৭ হাজার ৪৭১ কোটি ৭০ লাখ ৯১ হাজার ১৮৮ টাকা।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি আজাদ আহসান বাচ্চু ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘নানা কারণে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। তাদের হাতে থাকা অবশিষ্ট শেয়ার তারা বিক্রি করে বাজার থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। নির্বাচন পরবর্তী হয়তোবা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’

এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মোট লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৭২ লাখ ৩ হাজার ৭৭ টাকা। আর এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন ছিলো ৪৯ কোটি ৩৭ লাখ ২২ হাজার ৯ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মোট লেনদেন বেড়েছে ১২ কোটি ৩৪ লাখ ৮১ হাজার ৬৮ টাকা। দেশের দ্বিতীয় প্রধান এই শেয়ারবাজারে দুটি বাদে সবগুলো সূচক নিম্নগামী ছিলো। সিএসই’র প্রধান সূচক সিএএসপিআই গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ০ দশমিক ১৪৬৩ শতাংশ, সিএই৩০ সূচক বেড়েছে ০ দশমিক ০৬৫৯ শতাংশ, সিএসসিএক্স কমেছে ০ দশমিক ১৪৫১ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক কমেছে ০ দশমিক ০৮ শতাংশ, সিএসআই সূচক কমেছে ০ দশমিক ২১ শতাংশ এবং সিএসইএসএমইএক্স বেড়েছে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ। বিদায়ী সপ্তাহে মোট ২৭৫ টি কোম্পনি লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছিলো। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ৭৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিলো ১২৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছে। বাজারের তারল্য সংকট কাটানোর জন্য কমিশন কাজ করে যাচ্ছে।’



আরো পড়ুন