২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



অর্থনীতি
প্রিন্ট

যে কারণে বিশ্বমন্দায়ও রেমিট্যান্স বেড়েছে

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ০২ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৬:৩১ পিএম
যে কারণে বিশ্বমন্দায়ও রেমিট্যান্স বেড়েছে


বিশ্বমন্দায়ও ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৮ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে)। বাংলাদেশে ব্যাংকের রোববারের (১ জানুয়ারি) তথ্য বলছে, এই রেমিট্যান্স নভেম্বরের চেয়ে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ডলার বেশি। চলতি বছরের নভেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার। এর ২০২১ সালের ডিসেম্বররে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৩ কোটি মার্কিন ডলার। এই হিসাবে গত বছরের চেয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে ৭ কোটি ডলার বেশি এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের পাশিাপাশি বিদেশে শ্রমিক বেশি যাওয়ার কারণেই রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। তবে, রেমিট্যান্স যা এসেছে, তা পর্যাপ্ত নয় বলেও তারা মনে করছেন। 

রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম (জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) ৬ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪৯ কোটি ৩২ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ২৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের ১ম ছয় মাসে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার বেশি এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪০ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ ও বিদেশে শ্রমিক বেশি পরিমাণে যাওয়ায়ই মূলত দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। তবে রেমিট্যান্স যা এসেছে তা পর্যাপ্ত নয়। রেমিট্যান্সের প্রবাহ আরও বাড়াতে হবে। এই ব্যাপারে সরকারকে আরও নানামুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। আর আগামীতে রেমিট্যান্সের এই প্রবাহ অব্যাহত থাকবে কি-না, তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না । এটি নির্ভর করছে দেশে-বিদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ অন্যান্য সীমাবদ্ধতার ওপর।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও আমাদের রেমিট্যান্স বেড়েছে। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে বিদেশে কর্মরত আমাদের ভাই-বোনদের দেশে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করেছি। তারা আমাদের কথা রাখছেন। তারা বৈধ চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। আমরা অবৈধ অনেক হুন্ডি ব্যবসায়ীকে শাস্তির আওতায় নিয়ে এসেছে।’

মেজবাউল হক আরও বলেন, ‘অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায়ীরা অনেকটা সংকুচিত হয়েছেন। ভবিষ্যতে হুন্ডির মাধ্যমে যেন অর্থ দেশে না আসে, সেজন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। পাশাপাশি দেশ থেকে বিদায়ী বছরে অনেক শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তারা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। মোবাইল ব্যাংকিংকে আমরা উৎসাহিত করছি। তারা তাদের প্রডাক্ট নিয়ে বিদেশি শ্রমিকদের কাছে যাচ্ছেন। বিদেশি শ্রমিকরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। রেমিট্যান্সের এই প্রবাহ আগামীতেও যেন অব্যাহত থাকে, সে ব্যাপারে আমরা ওয়াকিবহাল রয়েছি।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/

আরও পড়ুন:  ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এলো ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার



আরো পড়ুন