২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার



থার্টি ফার্স্টে ভিন্নভাবে মাতবে কক্সবাজার

তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজার || ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:১২ পিএম
থার্টি ফার্স্টে ভিন্নভাবে মাতবে কক্সবাজার


২০২২ সাল বিদায় জানার আর মাত্র দু’দিন বাকি। তারপর সু-স্বাগতম জানাতে হবে ২০২৩ ইংরেজি নববর্ষ। বিদায়ী বর্ষের শেষ সূর্যাস্ত এবং নববর্ষকে স্বাগত জানাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত নগরী কক্সবাজারে জোরেসোরে প্রস্তুতি চলছে। হোটেল-মোটেল এবং পর্যটন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নব উদ্যমে সেজেছে। বর্ষবরণে বিভিন্ন হোটেলে থাকছে ইনডোর আয়োজন। কয়েক বছরের মতো এবারও সৈকতে বা পাবলিক প্লেসে বড় কোনো অনুষ্ঠান থাকছে না।

পর্যটন নগরীতে বর্ষবরণ উৎসবে কালের সাক্ষী হতে কে না চায়! বছরের শেষ সূর্যাস্ত বা গোধূলিলগ্ন দেখতে, থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন ও নববর্ষের সূর্যোদয় দেখার আগ্রহ নিয়ে পর্যটকের মহা মিলন ঘটতে যাচ্ছে কক্সবাজারে। 

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকবে কক্সবাজার। প্রায় হোটেল-মোটেল ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। প্রায় সাড়ে ৫০০ হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস, রেস্ট হাউস ও বিভিন্ন ফ্ল্যাটবাড়িতে রাত্রিযাপনের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন আড়াই লাখ পর্যটক। গাড়িতে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি ভবনের বারান্দা, সমুদ্র সৈকতের আশেপাশে খোলা আকাশের নিচে আরো লক্ষাধিক পর্যটক কোনো প্রকারে রাত পার করবেন। সর্বশেষ বড়দিনসহ টানা তিন দিনের ছুটিতেও লাখো পর্যটক ছিলেন খোলা আকাশের নিচে।

এদিকে বছরের শেষ সূর্যাস্ত অবলোকন ও নতুন বছরকে বরণ করতে বরাবরের মতো এবারও কক্সবাজারে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন বহু পর্যটক। ইতোমধ্যে হোটেল বুকিং দিয়ে তারা তাদের আগমন নিশ্চিত করেছেন। গত চলতি সপ্তাহের শুরুতে টানা ছুটি থাকায় অতীতের মতো এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটে অগ্রিম বুকিং হয়েছে। থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে কয়েক লাখ পর্যটক আসার প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

কলাতলী আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লোনা জলে গা ভাসানো আর বালুকা বেলায় দাঁড়িয়ে নতুন বছরের নতুন সূর্যের রোদে আলোকিত হয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটতে পারে। সেটিকে কেন্দ্র করে হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোতে আলাদা করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

হোটেল দি গ্র্যান্ড সেন্ডি ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রহমান বলেন, ‘নববর্ষ উপলক্ষে হোটেল বুকিংয়ের ক্রমান্বয়ে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কক্ষ বুকিং হয়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে একটি টানা ছুটি হয়ে যাওয়ায় সেভাবে সাড়া মিলবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’ 

ইনানীর তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপের এজিএম নাভেদ চৌধুরী বলেন, ‘১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমাদের হোটেল শতভাগ অগ্রিম বুকিং রয়েছে। থার্টি ফাস্ট নাইট ও নববর্ষ বরণের নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। দুইজন তারকা শিল্পী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন।’

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়েছে, নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। একইভাবে জেলা প্রশাসন বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করেছেন। শৃঙ্খলা রক্ষায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে জোরদার। 

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, ‘সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবারও উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফাস্ট নাইটের কোনো আয়োজন করা যাবে না। তাই কক্সবাজারেও কাউকে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’

জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, ‘কক্সবাজার শুধু দেশের নয় পৃথিবীর একটি আকর্ষণীয় পর্যটন জোন। তাই যেকোনো বিশেষ দিন উপলক্ষে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় থাকে। এবারও পর্যটকরা থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারমুখী হবে বলে প্রত্যাশা করছি। তাই পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ 

ঢাকা বিজনেস/এম



আরো পড়ুন