১৮ মে ২০২৪, শনিবার



অর্থনীতি
প্রিন্ট

সুদহার বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার || ১৮ জুন, ২০২৩, ১১:০৬ পিএম
সুদহার বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা


মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে বাজারে অর্থের জোগান আরও কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে নীতি সুদহার আরও এক দফা বাড়ানো হয়েছে। কমানো হয়েছে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা। ঋণ সুদহারের সীমা তুলে দিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ‘সঙ্কোচনমুখী ও আঁটসাঁট’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নতুন মুদ্রানীতিতে ঋণ বিতরণের সর্বোচ্চসীমা ৯ শতাংশের বাধা তুলে দিয়ে ‘রেফারেন্স রেট’ অনুযায়ী, সুদ হার নির্ধারণের নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে। ‘স্মার্ট-সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ’ নামের এই পদ্ধতিতে ৬ মাসের ট্রেজারি বিলের গড় হার ধরে ঠিক হবে রেফারেন্স। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ যোগ করে এবং ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে। কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাত ও ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খরচ সামাল দিতে আরও ১ শতাংশ যোগ করতে পারবে সুদ হারে।

আর এক দিন মেয়াদী রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) সুদ হার ৬ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। রিভার্স রেপো হার (জুলাই থেকে এসডিএফ নামে পরিচিতি হবে) আগের ৪ দশমিক ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। রেপো ও রিভার্স রেপোর এই নতুন হার ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত জানুয়ারির মুদ্রানীতিতে রেপোর সুদ হার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ শতাংশ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আর রিভার্স রেপো হার আগের ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছিল।

রোববার (১৮ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১ম ষান্মাসিক এর জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর-২০২৩)  নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়। পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে নতুন মুদ্রানীতি তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, এবারের মুদ্রানীতি ‘কন্ট্রাকশনারি ও টাইট’ ভঙ্গির। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এমন সিন্ধান্ত নিতে হয়েছে। 

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এখন থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব ‘দুই পদ্ধতিতেই’ করবে। অর্থাৎ, আগে যে পদ্ধতিতে করা হতো, সেভাবেও করা হবে। আবার বিপিএম৬ পদ্ধতিতেও করা হবে। তবে আমরা বিপিএম৬ পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রকৃত রিজার্ভের তথ্য হিসাব করলেও তা প্রকাশ করবো না।

মুদ্রানীতির যে প্রক্ষেপণ চলতি জুন মাস শেষে অভ্যন্তরীণভাবে ধরেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, তার কতটা অর্জন হয়েছে, সে তথ্যও জানানো হয় মুদ্রানীতির অনুষ্ঠানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ ধরা হলেও, মে মাস শেষে অর্জন হয়েছে ৪৩.৩ শতাংশ। আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৪.১ শতাংশ, হয়েছে ১১.১ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৮.৫ শতাংশ, আর গত মে পর্যন্ত হয়েছে ১৬.৭ শতাংশ।

জাতীয় বাজেটে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে ধরে রাখার পরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে সরকার।

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন