১৭ জুন ২০২৪, সোমবার



পাবনার খ্রিষ্টান পল্লীতে বড়দিন ঘিরে উৎসবের আমেজ

পাবনা সংবাদদাতা || ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৬:৪২ পিএম
পাবনার খ্রিষ্টান পল্লীতে বড়দিন ঘিরে উৎসবের আমেজ


 খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। দিনটিকে সামনে নিয়ে পাবনার  খ্রিষ্টান পল্লীতে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। চলছে আলোকসজ্জা, গির্জা ও উপাসনালয়গুলো সাজানো, নানা রঙ-বেরঙের আল্পনা আঁকা হচ্ছে। বাসা বাড়িগুলোতেও উৎসব ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। তৈরি করা হচ্ছে গোশালা। প্রস্তুত করা হচ্ছে ক্রিসমাস ট্রি। থাকছে বাড়ি-বাড়িতে পিঠাপুলির আয়োজনও। 

দিনটি উদযাপনে দূর-দুরান্তের স্বজনেরা আসতে শুরু করেছে নিজ এলাকায় স্বজনদের সঙ্গে বড়দিনের উৎসব আনন্দ ভাগাভাগি করে উপভোগ করতে। বাড়ির কর্তারা উপাসনালয়ে নানা প্রস্তুতি নিলেও বাড়ির গৃহিণীরা বসে নেই, ব্যস্ত পিঠাপুলি তৈরিতে। 

জানা যায়, দুই হাজার বছর আগে বর্তমানের ফিলিস্তিনের বেথেলহেমের এক গোশালায় মাতা মেরির গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন যিশু খ্রিষ্ট। তিনি মানুষকে দেখিয়েছিলেন মুক্তি ও কল্যাণের পথ। সেই যিশু খ্রিষ্টের  জন্মতিথি ‘বড়দিন’ উদযাপনে পাবনার খ্রিষ্টান পল্লী এখন ব্যস্ত। 

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ও ভাদড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ জানান, বাড়ির সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা করছেন সাধ্যমতো। বাসা-বাড়ি ও গর্জা, উপাসনালয়ের পথগুলোতে রঙের আঁচড়ে দেওয়া হচ্ছে নানা আল্পনা।

তারা জানান, প্রভু যিশু খ্রিষ্ট বেথেলহেমের যে গোশালায় জন্মেছিলেন, তার আদলে প্রত্যেক বাড়িতে গোশালা স্থাপনের কাজ চলছে। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই গোশালা সাজিয়ে তোলা হবে।

চাটমোহরের উথুলী উপাসনালয়ের পালক পংকজ গৌস্বামী বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন ঘিরে নেওয়া হয়েছে নানা আয়োজন। দিবসটি ঘিরে যার যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা যথাসাধ্য সেই দায়িত্ব পালন করতে তৎপর রয়েছেন। আশা করছি সুন্দরভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই বড়দিন উদযাপন করা হবে। 

বড়দিন ঘিরে কয়েকজন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, দিনটি স্মরণ রাখতে আমরা যথাসাধ্য আনন্দ বিনোদন করে থাকি। এই আনন্দটা একা নয় পরিবার, সমাজ ও গোষ্ঠীর সঙ্গে পালন করতেই নিজ এলাকায় ছুুটে আসি। গান-বাজনা, নাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটকসহ নানা আয়োজন থাকে।


পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সাধারণ সম্পাদক স্টিফেন সরকার বলেন, পাবনায় ৩০টি গ্রামের ২০টি উপাসনালয়ে বড়দিনের উৎসব হবে। প্রতিবার বড় পরিসরে সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজন গ্রহণ করা হয়। আয়োজনের মধ্যে নগরকীর্তন, বড়দিনের উপাসনা, কেক কাটা, পিঠা পর্ব, প্রীতিভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। আমরা আশাবাদী প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই বড়দিনের উৎসব উদযাপন করতে পারবো।

চাটমোহরের মথুরাপুর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার দিলীপ এস কস্তা বলেন, যিশু খ্রিষ্ট আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং অন্তরের অন্ধকার দূর করে আলোর পথ দেখানোর বাণী নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন। জগতে শান্তি-ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং সবার মাঝে ভাতৃত্ব মিলন বজায় রাখার আহবানে পালিত হবে এবারের বড়দিন।

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বরেন, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বড়দিন পাালন করতে পারেন সে লক্ষ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব চার্চে, গীর্জায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশও থাকবে। যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সোচ্চার।

আরিফ/এম 



আরো পড়ুন