২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার



সন্ত্রাসী হামলার পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:০৪ এএম
সন্ত্রাসী হামলার পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করল ভারত


ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখিয়েছে নয়াদিল্লি। এরই অংশ হিসেবে ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছে ভারত সরকার।


মঙ্গলবার হামলার পর দিনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এনডিটিভিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে।


১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সফল পানিবণ্টন চুক্তি হিসেবে পরিচিত। সিন্ধু নদী অববাহিকার পানি ভাগাভাগিতে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর ছিল এই চুক্তি। তবে ভারতের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের ফলে নিচু অঞ্চলে থাকা পাকিস্তানের নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানির ঘাটতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।


এছাড়া নয়াদিল্লি থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য সার্কভুক্ত বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইস্যু করা সব সার্ক ভিসা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বর্তমানে ভারতে অবস্থানকারী ভিসাধারীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, আটারি-ওয়াঘা সীমান্তচেকপোস্ট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। তবে বৈধ ভিসাধারীরা ১ মে’র আগে পর্যন্ত ফিরতে পারবেন।


ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কেও বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা এসেছে। পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের সামরিক উপদেষ্টাদের প্রত্যাহারের পাশাপাশি, পাকিস্তানি নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উভয় দেশের হাইকমিশনে কর্মরত কূটনীতিকদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা কার্যকর হবে ১ মে থেকে।


ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বরাতে দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পেহেলগামের হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (আরটিএফ)। যদিও পাকিস্তান সরকার হামলার নিন্দা জানিয়ে ভারতের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।


দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারত সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে বিশ্লেষকরা একটি কঠোর কূটনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখছেন।




আরো পড়ুন