১৩৭ বছরের পুরানো টাঙ্গাইল পৌরসভার পরিধি ও পৌরভবনের পরিবর্তন হলেও সেবার মান বাড়েনি। বিশেষ করে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
টাঙ্গাইল শহরের যাওয়ার অন্যতম কাগমারা ব্রিজ থেকে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘ ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে অল্প বৃষ্টি হলেই এই রাস্তা দিয়ে যানবাহন ও মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বছরের পর বছর এসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। পৌরবাসী দ্রুতই এসব রাস্তার মেরামতের দাবি জানিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে খানাখন্দ দ্রুত মেরামত করা হবে।
১৮৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে টাঙ্গাইল পৌরসভা। ১৯৮৯ সালে ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নীত হয় এই পৌরসভা। স্থানীয়রা জানান, পশ্চিম টাঙ্গাইলের সাধারণ মানুষের শহরে আসার অন্যতম রাস্তা হলো কাগমারা থেকে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব সড়ক। বিশেষ করে বেড়াডোমা ব্রিজটি ভাঙার পরে যান চলাচলের পক্ষে অচল হয়ে পড়ায় বেশিরভাগ মানুষ কাগমারা থেকে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব সড়ক ব্যবহার করে। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু ব্যস্ততম এই রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় প্রায় ১০ বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের কারণে প্রায় প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে এই রাস্তা ব্যবহারকারীদের। কোমলমতি শিক্ষার্থী ও এই রাস্তায় চলাচলরত রোগীরা বেশি বিপদে পড়েছে। হেঁটে চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। রোগী নিয়ে হাসপাতালেও দ্রুত যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, এতে রোগীর অবস্থাও সংকটপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গর্ভবর্তী নারীদের আরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া শহরের কোর্ট চত্বর থেকে এলজিইডি মোড় পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
কাগমারা এলাকার বাসিন্দা আবু সাইদ বলেন, এসব রাস্তা দিয়ে পায়ে হাঁটাও অনুপযোগী হয়েছে। অল্পবৃষ্টি হলেই টাঙ্গাইল শহরসহ বিভিন্ন স্থানে হাঁটু সমান জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘদিন করে আমরা এ অবস্থায় বসবাস করছি।
সোহেল রানা নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হয়েও আমরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাঘাট বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে সড়কে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতেও আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। অসুস্থ রোগী ভাঙা এসব রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় ওই রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করার প্রয়োজন।
রাস্তায় চলাচলরত ব্যাটারি চালিত অটো ও অটোরিকশা চালকরা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এসব রাস্তা চলাচল অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে কখনো আমাদের গাড়ি উল্টে যাচ্ছে, আবার কিছুদিন পর পর গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যাত্রীরাও প্রতিদিন কেউ না কেউ আহত হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক শিহাব রায়হান বলেন, বিভিন্ন রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। গুরুত্ব বিবেচনা করে রাস্তার সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। বাজেট বরাদ্দ পাওয়া গেলে আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তার কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবো।