২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার



অর্থনীতি
প্রিন্ট

ব্রয়লারসহ ৩ পণ্যের দাম বাড়লো

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ০১ এপ্রিল, ২০২৩, ০৩:০৪ পিএম
ব্রয়লারসহ ৩ পণ্যের দাম বাড়লো


মিরপুর-৬ নম্বরে কাঁচাবাজারে এসেছেন গৌরান্দ সরকার। অবসরে থাকা গৌরান্দ বিক্রেতার সঙ্গে বেগুনের কেজি ৮০ টাকায় দর কষাকষি করে নিলেন মাত্র দুটি। ঘরে মানুষ কম থাকায় কম বেগুন নিয়েছেন বলে জানালেন বিক্রেতাকে। কিন্তু আসল ঘটনা ঢাকা বিজনেসের এই প্রতিবেদককে জানালেন কিছুক্ষণ পর। তিনি বলেন, ‘আমার চাহিদা এক কেজি। কিন্তু আমি নিয়েছি মাত্র দুটি। কারণ, দাম অনেক বেশি। খেতেতো হবে। তাই একটু একটু করে হলেও নিয়ে যাচ্ছি প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য।’

শনিবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর-৬ নম্বর কাঁচাবাজার, ফার্মগেইট আন্ডার গ্রাউন্ড মাছের বাজার, ভ্রাম্যমাণ বাজার, কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা গেছে, গৌরান্দ সরকারের মতো পরিস্থিতি বেশিরভাগ নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, মুলা, ফুল কপি, শিম বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। অফ সিজন হওয়া এসব নিত্যপণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলে জানান বিক্রেতারা। বাজারে মুলা ৬০, ফুল কপি ৫০ ও শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে, কাঁচামরিচ, বয়লার মুরগি, আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকদিনের ব্যবধানে। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কয়েক দিন আগে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায় প্রতি কেজি। আর ব্রয়লার মুরগি ২১০ ও আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা দরে। তবে অন্যান্য কাঁচাসবজি আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, ঢেঁরস ৮০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও, কাঁচাকলা প্রতি হালি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি ব্যবসায়ী মো. জিলান বলেন, ‘আমরা যে দামে মুরগি কিনে নিয়ে আসি, তার চেয়ে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করে থাকি। আমাদেরও তো চলতে হবে।’

এদিকে, মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগের মতো বিক্রি নেই। বিক্রি অনেক কমে গেছে। আমরা নিজেরাও বুঝতেছি মাছের দাম অনেক চরা। কিন্তু কী করবো আমরাও বাড়তি দামে কিনে নিয়ে আসি। যে কারণে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হয়।

সরবরাহ কম থাকায় ব্রয়লার মুরগি ও কাঁচামরিচের দাম আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। সরেজমিন ঘুরে আরও জানা গেছে, কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা দরে। এ ছাড়াও, দেশি মুরগি ৬৩০ টাকা, কক ৩৩০ টাকা, হাঁস ৪৬০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। এদিকে ফার্মের ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। লাল ফার্মের ডিম ৪০ টাকা ও সাদা ফার্মের ডিম ৩৮ টাকা প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে।

ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি রমজানেই ডিমের দাম কমে যায়। এবারও তাই হয়েছে। মূলত চাহিদা কম থাকায় রমজানে ডিমের দাম কম বলে জানান তারা।

খাসির মাংস আগের মতোই ১১০০ টাকা ও গরুর মাংশ সাড়ে ৭০০ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারও চড়া। প্রতি কেজি বোয়াল মাছ ৭০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, রুই ৪০০ টাকা, কাতল ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। 

ফার্মগেট আন্ডারগ্রাউন্ড বাজারের মাংস বিক্রেতা কুরবান বলেন, ‘কাস্টমার অনেক কমে গেছে। দোকান খুললেই সেদিন ২০০০ টাকার মতো খরচ আছে আমার। বর্তমানে ব্যবসা নেই। লসে আছি। আর ফার্মগেটের ব্রিজটা ভাঙ্গাতে ওইপারের লোকজন এপারে আসতে চায় না। অনেক ব্যবসায়ী এই বাজার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে।’

মিরপুর পল্লবীর পাইকারি মুরগি ব্যবসায়ী ও বাবুল চিকেন হাউজের প্রোপাইটর মো. ইব্রাহিম মিয়া (মিঠু) বলেন, ‘কয়েকদিন আগে মুরগির বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ অনেক বেশি ছিল, যে কারণে দাম অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন আবারও সরবরাহের সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদামতো বাজারে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন হচ্ছে না। যে কারণে আবারও বেড়ে গেছে মুরগির দাম।’ 

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন