২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



মৃৎশিল্পীদের সচ্ছলতায় মাটির কয়েলদানি

আনোয়ার হোসেন বুলু, দিনাজপুর || ২১ এপ্রিল, ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম
মৃৎশিল্পীদের সচ্ছলতায় মাটির কয়েলদানি


প্লাস্টিক আর মেলামাইনের যুগে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যাচ্ছে। কঠিন হয়ে পড়ছে বাপ-দাদার পেশায় টিকে থাকা। তখন মৃৎশিল্পীরাও নতুন নতুন আইটেম আবিষ্কার করছেন পেশা আঁকড়ে ধরে থাকার জন্য। এমনি একটি নতুন আবিষ্কার মাটির তৈরি কয়েলদানি। 

মৃৎশিল্পীরা বলছেন, এখন আর মাটির তৈরি হাঁড়ি, পাতিল তেমন বিক্রি হয় না। তাই আমরা নতুন নতুন প্লাস্টিকের অবিকল জিনিসপত্র তৈরি করার চেষ্ট করছি। তারমধ্যে একটি মাটির তৈরি কয়েলদানি। বিক্রি হচ্ছে ভালো। আর বিক্রেতারা বলছেন, গরমের সময় যখন বিদুৎ চলে যায়। তখন মাশার উৎপাত বাড়ে। কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। তাই মাটির তৈরি কয়েলদানি কিনছেন ক্রেতারা। 

উপজেলার মাঠপাড়া গ্রামের মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন ধরে হিলিতে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েছে। রাতের শোয়ার সময় আর বিদুৎ থাকে না। তখন কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করি। এতদিন কয়েল জ্বালিয়ে রাখার নির্দিষ্ট কোনো পাত্র ছিল না। প্লেট বা পেপার বা অন্য যে-কোনো পাত্রের ওপর কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হতো। কিন্তু কয়েল এখনকার বিভিন্ন কোম্পানির কয়েল মুহূর্তের মধ্যেই ফুরিয়ে যায়। 

মোফাজ্জল হোসেন আরও বলেন, ‘আজ  (২১ এপ্রিল) বাজারে এসে দেখি, মৃৎশিল্পীরা নতুন স্টাইলে কয়েলদানি বানিয়েছেন। যা মাটি দিয়ে তৈরি। কয়েলদানির ওপরে ফটো করা ঢাকনা আছে, মাঝখানে কয়েল জ্বালিয়ে  রাখার মতো বিশেষভাবে স্ট্যান্ড থাকে। যাতে একসঙ্গে কয়েকটি কয়েল জ্বালানো সম্ভব।’

মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘আমি গত বৃহস্পতিবার একটি মাটির তৈরি কয়েলদানি ৩০ টাকা দিয়ে কিনেছি। মাটির তৈরি এই কয়েলদানিতে কয়েল বসিয় রেখে ঢাকনা দিয়ে হয়। আর ঢাকনার ফুটো দিয়ে কয়েলের ধোঁয়া বের হয়ে আসে। ঘুমিয়ে পড়ার পর বিদ্যুৎ এলে আগে ফ্যানের বাসাসে কয়েল দ্রুত পুড়ে যেতো। এখন আর মাটির তৈরি কয়েলদানিতে  ঢাকনা থাকার কারণে দ্রুত পুড়ে যায় না। এতে অনেক সুবিধা হয়েছে।’

মৃৎশিল্পী অমল পাল ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমাদের প্লস্টিক সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে  টিকে থাকলে হলে আরও নতুন কিছু আবিষ্কার করতে হবে। এমন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

অমল পাল আরও বলেন, ‘কয়েল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে রাখতে হয়। মাটিরপাত্র ছাড়া অন্য যে-কোনো পাত্রে কয়েল রাখলে একসময় হয়তো পাত্রসহ আগুন ধরে যেতে পারে। আর মাটির তৈরি কয়েলদানির ওপরে ঢাকনা আছে। কয়েলে পুড়ে শেষ হলেও ছাইগুলোও ওই পাত্রের মধ্যে জমা থাকবে। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সুযোগ নেই।’

/ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন