বর্তমান সরকার বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায় বলে জানিয়েছন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে যত টাকা লাগে দেবো। বিশ্বে যত নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তারা কিভাবে শিক্ষা দেয়, কী কারিকুলাম শিখায়, সেই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা সেরকম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাদেশে তৈরি করতে চাই।’রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জাতির পিতা বলতেন, ‘শিক্ষায় যে খরচ সেটা হচ্ছে বিনিয়োগ’ আমি সেভাবেই মনে করি। কাজেই, এজন্য আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে যত টাকা লাগে আমি দেবো।’’
কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে হাতেকলমে শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। যেন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। সবাই যে শুধু সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে তা নয়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হলে কারিগরি শিক্ষার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। আমরা সারাদেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। কল-কারখানা গড়ে উঠবে সেখানে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের দ্বারপ্রান্তে, তার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত নাগরিক আমাদের প্রয়োজন পড়বে। কাজেই উপযুক্ত কর্মঠ জনগোষ্ঠী আমাদের গড়ে তুলতে হবে। যারা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। ফলে, দেশের উৎপাদন বাড়বে এবং দেশে বিনিয়োগ আসবে সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এছাড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও বক্তব্য রাখেন ।
মন্ত্রণালয়গুলো এ বছর ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি নতুন বই বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। দেশের প্রতিটি উপজেলায় ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তক পাঠানো হয়েছে।
সরকার ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ৪৬৪ কোটি ৭৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে।
২০১৭ সাল থেকে সরকার সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর শিশুদের তাদের মাতৃভাষায় অধ্যায়নের জন্য চাকমা, মারমা,ত্রিপুরা, গারো ও সাদরি ভাষার বই বিতরণের পাশাপাশি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বই বিতরণ করছে।