২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



হলুদ সাজে পাইকগাছার প্রকৃতি

আশরাফুল ইসলাম সবুজ, পাইকগাছা || ১৯ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম
হলুদ সাজে পাইকগাছার প্রকৃতি


শীতের রিক্ততায় রঙ ও প্রাণের স্পন্দন এনেছে সরিষা ফুল। দিগন্ত বিস্তৃত হলুদ ফুল সাজিয়েছে প্রকৃতিকে। চারদিকে শুধু মৌ মৌ গন্ধ। শীত প্রকৃতি রাঙাতে সরিষা ফুলের যেন বিকল্প নেই।

 খুলনার পাইকগাছায় পথে-প্রান্তরে সবখানেই এখন হলুদ প্রকৃতির এমন দৃশ্য বিরাজমান। প্রকৃতির মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়েছে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের হৃদয়ে। সরিষা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন সরিষা ক্ষেতে। অনেকেই সঙ্গে নিচ্ছেন প্রিয়জন কিংবা পরিবার-পরিজন। 

ছুটির দিনে এমন প্রকৃতিকে কাছ থেকে উপভোগ করতে পরিবার সঙ্গে নিয়ে হলুদ সরিষা ক্ষেতে যাচ্ছেন প্রশাসনের অনেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারাও। ক্ষেতের পাশে দাঁড়িয়ে নানা ভঙ্গিমায় ছবি তুলছেন এবং এসব ছবি প্রত্যেকেই তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে নানা উপমা দিয়ে পোস্ট করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বেশ অনেকটা জায়গা দখল করে নিয়েছে সরষে ফুল। 

উল্লেখ্য, সরিষা মূলত ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করে থাকলেও এটি একটি লাভজনক বহুমুখী ফসল। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে চলতি মৌসুমে ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৬০ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে বারি সরিষা ১৪, ১৫, ১৭ ও ১৮ এবং বিনা সরিষা ৪ ও ৯। বর্তমানে দানা অবস্থায় রয়েছে, জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে আহরণ শুরু হতে পারে এবং ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে শতভাগ আহরণ সম্পন্ন হবে এবং হেক্টর প্রতি ১.১২ মেট্রিক টন উৎপাদন হবে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের সরিষা চাষি ও ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর আমি ১৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। আশা করছি ভালো উৎপাদন হবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রুমা বলেন, ‘সরিষা একটি লাভজনক ফসল। সরিষার সঙ্গে মধু চাষ করলে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ ভাগ উৎপাদন বেশি হয়।’ 

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সরিষা একটি বহুমাত্রিক ফসল। এর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তেল এবং খৈল অনেক মূল্যবান। সরিষা চাষে উৎপাদন খরচ কম। অনেক সময় বিনা চাষেও আবাদ করা যায়। সাথী ফসল হিসেবে উৎপাদন করা যায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে ৯০ ভাগ ভোজ্যতেল আমদানি নির্ভর করতে হয়। এজন্য সরকার আগামী ৩ বছরের মধ্যে ৪০ ভাগ আমদানি কমাতে তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে সাধারণ কৃষকরাও তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।’  

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, ‘শীত প্রকৃতির সৌন্দর্যের আরেক নাম সরিষাফুল। মৌ মৌ ঘ্রাণ আর সরিষা ফুলের মন জুড়ানো দৃশ্য শীত প্রকৃতিকে করে তোলে অনন্য। পরিবার পরিজন নিয়ে হলুদ সরিষা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার মাঝে অফুরন্ত ভালো লাগা অনুভূত হয়।’

ঢাকা বিজনেস/এম



আরো পড়ুন