চলতি মৌসুমে সুন্দরবনে গোলপাতা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এবার ৭ হাজার মেট্রিক টন গোলপাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চাঁদপাই রেঞ্জের দুটি কূপ থেকে এই গোলপাতা সংগ্রহ করা হবে। রবিবার (২৯ জানুয়ারি) গোলপাতা আহরণ মৌসুমের প্রথম দিনে পূর্ব সুন্দরবন থেকে অনুমতিপত্র (বিএলসি) নিয়ে গোলপাতা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে চাঁদপাই রেঞ্জে বনের দুটি গোলপাতার কূপে গেছেন ৩০ বাওয়ালী। গোলপাতা সংগ্রহ চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
সুন্দরবনের কর্মকর্তারা জানান, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে দুটি গোলপাতা কূপ আছে। এই দুটি গোলপাতা কূপের মধ্যে চলতি মৌসুমে শ্যালা কূপ থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন আর চাঁদপাই কূপ থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন গোলপাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে রাজস্ব বাড়িয়ে ৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মৌসুমে যা ছিল কুইন্টাল প্রতি মাত্র ২৫ টাকা।
গত মৌসুমে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা ও চাঁদপাই কূপ থেকে সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০০টি বিএলসি নিয়ে বাওয়ালীরা ১০ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন গোলপাতা সংগ্রহ করেন। গত মৌসুমে গোলপাতা থেকে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ রাজস্ব আয় হয়েছে ৯ লাখ টাকা।
সুন্দরবনের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মৌসুমে কুইন্টাল প্রতি ২৫ টাকার স্থলে রাজস্ব এবার ৬৮ টাকা নির্ধারণসহ গত মৌসুমের চেয়ে বেশি গোলপাতা সংগ্রহ হবে। এতে রাজস্ব আদায় ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসন বলেন, ‘সুন্দরবনের ওপর থেকে চাপ কমানোর জন্য গোলপাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা এই বছর দেড় হাজার মেট্রিক টন কম করা হয়েছে। বাওয়ালীরা যেন নির্বিঘ্নে গোলপাতা কাটতে পারেন, তার জন্য বন বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। প্রতিটি কূপে নিয়মিত তদারকি করে বিএলসি নবায়ন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
বেলায়েত হোসেন আরও বলেন, ‘গোলপাতা সংগ্রহে এবারও বাওয়ালীদের শর্ত দেওয়া হয়েছে। গোলপাতা কাটার জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় বনে থাকা যাবে না। গোলপাতা ঝাড়ের মাইজপাতা ও ঠেকপাতা কোনোভাবেই কাটা যাবে না। গোলপাতা কাটতে গিয়ে কোনো বাওয়ালী গোলপাতার ছাড়া অন্য কোনো প্রজাতির গাছ কাটতে পারবেন না। বন্যপ্রাণী শিকার বা বনের ক্ষতি করলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গোলপাতা দিয়ে ঘরের ছাউনি দেওয়া ছাড়াও ছাতা, ঝুড়ি, মাদুর, থলে, খেলনা প্রভৃতি তৈরি হয়।
ঢাকা বিজনেস/বাপ্পা/এনই/