ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর-এলাকার ছয়বাড়িয়ায় ডিসি প্রজেক্ট নির্মাণ কাজ এখনো শুরু হয়নি। মডেল মসজিদের অবস্থান এর ভেতরেই। পুরো প্রজেক্ট ছেয়ে আছে কাশবনে। লম্বা লম্বা চিকন চিকন সবুজ রঙের কাশ গাছগুলো বাতাসে দুলে উঠে মায়াবি পরিবেশ সৃষ্টি করে। শরতেই দেখা মেলে কাশবনের প্রকৃত রূপ। ফুল ফোটে জানান দেয় শরৎকাল আগমণের।
মডেল মসজিদ নির্মাণ হওয়ার পর সেই কাশবনেও যেন প্রাণ ফিরেছে। মডেল মসজিদ ও কাশফুল মিলেমিশে বিরান ডিসি প্রজেক্ট এলাকাকে করে তুলেছে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ভাণ্ডার। আশ্বিন মাসের সাদা সাদা তুলোর মতো ঘ্রাণহীন চোখ জুড়ানো-মন ভোলানো লম্বাটে সবুজ গড়নের সাদা পেঁজাতুলোর মতো ডালপালায় ভর্তি কাশফুল দেখতে প্রতিদিন দুপুরের পর থেকেই প্রকৃতিপ্রেমীদের ঢল নামে। দল বেঁধে ছোটেন কাশফুল ও মডেল মসজিদের শুভ্রতা উপভোগ করতে।
মডেল মসজিদের উঁচু সিঁড়ি, তীরের মতো আকাশের বুক চিরে আরও ওপরে ছুটতে চাওয়া গম্বুজ, মসজিদের বাহ্যিক অনন্য নির্মাণ শৈলী আর সবুজ প্রকৃতি-নীল আকাশের মাঝে ছয়বাড়িয়ার ডিসি প্রজেক্টের সাদা কাশফুল বন হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার পর্যটকদের নতুন গন্তব্য। তাই প্রায় প্রতিদিনই ২-৩ হাজার প্রকৃতিপ্রেমি নারী-পুরুষ, কিশোর-তরুণ-যুবা ও শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে ওই এলাকা। প্রকৃতির সুধা পান করেন আকণ্ঠভরে।
মডেল মসজিদ ও কাশফুলের শুভ্রতার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যেতে এবং স্মৃতিগুলো ধরে রাখতে ছবি তুলেন পর্যটকরা। একা, দলবেঁধে-মসজিদের বারান্দায়, মসজিদকে ডানে-বায়ে-সামনে-পেছনে রেখে যে যার মতো ছবি-সেলফি তোলেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
একইসঙ্গে ছবি তুলে দেওয়ার জন্য রয়েছেন কয়েকজন পেশাদার ফটোগ্রাফারও। অনেকেই তাদের দিয়ে ছবি তুলছেন। আবার অনেকই নিচের খাদেমের অনুরোধ না শুনে দোতলায় মসজিদের বারান্দায় উঠে ছবি তুলছেন। মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা না করে ছবি তোলায় মত্ত হয়ে ওঠার এমন দৃশ্যে উদ্বিগ্ন মুসল্লি ও মসজিদসংশ্লিষ্টরা।
সরজমিনে দেখা গেলো, মসজিদ চত্বরে দাঁড়িয়ে মসজিদের খাদেম আউয়াল মসজিদের মর্যাদা রক্ষা করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছেন। প্রতিদিনই তাকে এভাবে পর্যটকদের মসজিদের বারান্দায় উঠে ছবি না তোলার জন্য অনুরোধ করায় ব্যস্ত থাকেন। কেউ মানেন, কেউ মানেন না। অনেকে রাগারাগিও করেন। তিনি বলেন, ‘ছবি তোলার জন্য অনেকেই মসজিদের আদব রক্ষা করেন না।’ তিনি সবাইকে আরও সতর্ক হওয়ার অনুরোধ জানান।
প্রকৃতিপ্রেমী আশ্রাফ মেহেদী বলেন, ‘এই জায়গাটায় এলে আর বাড়ি যেতে মন চায় না। কাশবনে মিলিয়ে যেতে মন চাই।’
স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসা আজিজ আহমেদ বলেন, ‘সুযোগ পেলেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে ঘুরতে আসি। ভালো লাগে। কাশবনের সঙ্গে মসজিদটি এই জায়গাটির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
ঢাকা বিজনেস/এনই/