১৭ জুন ২০২৪, সোমবার



টাঙ্গাইলে চাপড়া বিলে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

আব্দুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইল || ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৮:০৯ এএম
টাঙ্গাইলে চাপড়া বিলে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ


টাঙ্গাইলের বাসাইলে বাসুলিয়ায় চাপড়া বিলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক মিঞা স্মরণে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। চাপড়া বিলে প্রতি বছর নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয়। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। 

নৌকাবাইচ দেখতে দুপুর থেকেই দর্শনার্থীদের ঢল নামে ওই এলাকায়। আশপাশসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বৃদ্ধ ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ নৌকাবাইচ দেখতে আসেন। এই প্রতিযোগিতা উপলক্ষে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার চালানো হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সুসজ্জিত নৌকায় রঙ-বে-রঙ্গের পোশাক পরে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন মাঝি-মাল্লারা। বাদ্যযন্ত্রের তাল আর বৈঠা ফেলার ছপ ছপ শব্দ যেন একাকার হয়ে গিয়েছিল চাপড়া বিলে। কেউ কেউ ছোট নৌকা ভাড়া করে পরিবার পরিজন নিয়ে বিলের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। সন্ধ্যার দিকে শেষ হয় এই প্রতিযোগিতা।


টাঙ্গাইলে কয়েকটি উপজেলা থেকে আল্লাহ ভরসা, মায়ের দোয়া, সোনার তরী,  হিরার তরী, ফুলের তরী, আদর্শ তরী, ময়ূর পঙ্খী, পঙ্খীরাজ ও জলপরীসহ বাহারি নাম ও রঙের ডিঙি, কুশা, সিপাই, খেলনা, অলংগাসহ কয়েক ধরনের প্রায় অর্ধশতাধিক নৌকা অংশগ্রহণ করে। ছোট, বড় ও মাঝারি নৌকা পৃথক কয়েকটি রাউন্ডে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) আখতার হোসেন। প্রধান আলোচক ছিলেন আনোয়ার খান মডেল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের কিডনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এমএ সামাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব আমীন শরিফ সুপন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ওলিউজ্জামানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দিন আহমেদ, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মতিয়ার রহমান গাউস, সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিক প্রমুখ।


দর্শনার্থীরা বলেন, নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে পেরে আমরা অনেক মুগ্ধ হয়েছি। আমরা সবাই অনেক আনন্দিত হয়েছি। পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা নৌকা বাইচ দেখেছি। প্রতি বছর এ প্রতিযোগিতকার আয়োজন করার দাবি জানাচ্ছি।

প্রতিযোগিতায় মা-বাবার দোয়া নামের নৌকাটি চ্যাম্পিয়ন হয়। এ নৌকার মালিক প্রথম পুরস্কার হিসেবে মোটরসাইকেল পায়। আর চাচা-ভাতিজা নামের নৌকাটি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এ নৌকার মালিককে ফ্রিজ দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। নিউ হুগড়া একতা তৃতীয়স্থান হয়।

পরে অতিথিরা বিজয়ী, চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপসহ অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি নৌকার বিজয়ীদের হাতে আকর্ষণীয় পুরস্কার তুলে দেন।

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন