অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়ে একটি নতুন সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য । সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৫ম বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুই দেশের মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬.৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য থেকে ৫৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) পেয়েছে, যা ২০২২ সালে বিদেশ থেকে পাওয়া সর্বোচ্চ এফডিআই।
এই সংলাপের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ও যুক্তরাজ্যের এফসিডিও’র স্থায়ী আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন। তারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা, অভিবাসন, জলবায়ু, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও গতিশীলতাসহ দুই কমনওয়েলথ দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের সার্বিক পর্যালোচনা করেন। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্জিত উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য হিসাবে যুক্তরাজ্যের বাজারে টেকসই প্রবেশ সহায়তার প্রশংসা করে,২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি দেশে উন্নীত হওয়ার পরও ২০২৯ সাল পযন্ত এটা অব্যহত রাখার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য অভিবাসন ও গতিশীলতা বিশেষত যুক্তরাজ্যে নার্সিং, আতিথেয়তা, কৃষি, নির্মাণ ও রাজমিস্ত্রিসহ অন্যান্য সেবা খাতে লাভজনক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষ অভিবাসন, গতিশীলতা ও যোগ্যতার পারস্পরিক স্বীকৃতি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনে সম্মত হয়েছে।
তারা যুক্তরাজ্যে অনিয়মিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশী নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে একটি এসওপি স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছে। ২০২২ সালে স্টুডেন্ট, ভিজিট ও বিজনেস ভিসা উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানায়। উভয় পক্ষ ফৌজদারি বিষয়ে পারস্পরিক আইনী সহায়তা নিয়েও আলোচনা করেছে।
চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে স্বাক্ষরিত জলবায়ু চুক্তির কথা স্মরণ করে উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিকভাবে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তারা একটি নেট-জিরো ও প্রকৃতি-বান্ধব বিশ্বের লক্ষ্যে জলবায়ু চুক্তির অধীনে সময়োপযোগী একটি জয়েন্ট অ্যাকশন প্ল্যানে স্বাক্ষর করতেও সম্মত হয়েছে। যুক্তরাজ্য পক্ষ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, সহিংসতামুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে উৎসাহিত করেছে। তারা বাংলাদেশের টেকসই অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ঢাকা বিজনেস/এমএ/