লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে হালিতে ডিমের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৮ টাকা। স্থান ভেদে প্রতিডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, অন্যান্য নিত্যপণ্যের মধ্যে ডিমের দাম কিছুটা স্থিতিশীল ছিলো। কিন্তু সেই ডিমের দামও এখন অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। শনিবার ( ১২ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুর-২ নাম্বারের বড়বাগ কাঁচাবাজার, আগারগাঁও তালতলা বাজার ও কাওরান বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, ফার্মের লাল ডিম প্রতিডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা দরে। এর আগের সপ্তাহের একই সময়ে যা বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। আর প্রতি ডজন ফার্মের সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকা দরে। এর আগের সপ্তাহের একই সময়ে যা বিক্রি হয়েছে ১৪৫ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
আগারগাঁও তালতলায় বাজার করতে এসেছেন আব্দুর রশিদ। তিনি ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘ডিমের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়া নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের জন্য ভালো হচ্ছে না। নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটে ডিম দিয়ে। কিন্তু এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আর কিছুদিন পর ডিম তাদের নাগালের বাহিরে চলে যাবে। দিনে যদি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বাজার মনিটর করে তাহলে রাতে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে। কাউকে কিছু বলার নেই।’
ডিম বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমরা বেশি দাম দিয়ে ডিম কিনে নিয়ে আসি। আমাদের কিছু লাভ রাখতে। ডিমের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। যে কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। আগে যারা ডিম উৎপাদন করতো তাদের অনেকেই এখন ডিম উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ এই ব্যবসায় লাভ নাকি কম হয়। এছাড়াও ডিম উৎপাদনের পরে অনেক ডিম নষ্ট হয়ে যায়। আবার ডিম বাজারে আসতে আসতে আরও কিছু ডিম নষ্ট হয়ে যায়। তেল, বিদ্যুৎ এবং পরিবহন খরচ যদি স্বাভাবিক রাখা যায় তবে ডিমের দামও কমে আসবে।’
এদিকে সবজির বাজারে কিছু পণ্যের দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত বেশির ভাগ সবজির দাম। কেজিতে ৫০-৬০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দরে, ঢেড়স প্রতিকেজি ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে, কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে কাকরোল প্রতিকেজি ৭০ টাকা, পটল প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা দরে,আলু প্রতিকেজি ৪০ টাকা, গাজর গত সপ্তাহের মতো এখনো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে, করলা ৭০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, ধুন্দল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, উসতা ৭০ টাকা, ২০ টাকা বেড়ে বরবটি ১০০ টাকা, কচুরমুখি ৯০ টাকা, শসা ৮০ টাকা। লম্বা বেগুন৬০ টাকা ও গোল বেগুন ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা। লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৬০ টাকা ও ৫০ টাকা কমে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে ।
মিরপুর-২ নাম্বারের বড়বাগ কাঁচাবাজারের বিক্রেতা গোলাম রহমান ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘এখন সবজির মৌসুম হলেও অতিবৃষ্টির কারণে অনেক সবজি পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। চাষিরা সময় মতো সবজি জমি থেকে তুলতে পারেনি। ফলে কাঁচা সবজির সরবরাহ কমে গিয়েছে। এসব কারণে কিছু সবজির দাম বেড়েছে।’
মাছ-মাংসের বাজার ঘুরে জানা গেছে, ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি কক ৩০০ টাকা। গরুর মাংস ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা দরে।
মাছের বাজারে হাইব্রিড শিং মাছ আকার ভেদে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিকেজি চিংড়ি ৭০০ টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১৫০০ টাকা, মাঝারি আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, পাঙ্গাস ২৪০ টাকা, দেশি মাগুর ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা, আকার ভেদে রুই মাছ ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা, মৃগেট ৩৫০ টাকা, হাইব্রিড কই ২৬০ টাকা ও তেলাপিয়া ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।