কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী। এই দ্বীপের সঙ্গে সহজ যাতায়াতের মাধ্যম হচ্ছে নৌরুট। প্রতিদিনই এই নৌরুটে যাতায়াত করেন হাজার হাজার যাত্রী। পর্যটন মৌসুমে এই রুটে পর্যটকদের যাতায়াতও বেড়ে যায় বহুগুণে। এই নৌরুটে মহেশখালী জেটিতে স্পিডবোট বা ট্রলারে উঠতে প্রতিদিনই যাত্রী কিংবা পর্যটকদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। জেটিতে নেই কোনো ধরনের বসার ব্যবস্থা ও পাবলিক টয়লেট। অবশেষে বিষয়টি নজরে এসেছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের। যাত্রী কিংবা পর্যটকদের ভোগান্তি লাঘবে মহেশখালী জেটিতে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন পান ভাস্কর্য।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে জানায়, এই ভাস্কর্যকে ঘিরে থাকছে পাবলিক সিটিং, নামাজের ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, রেস্টুরেন্ট ও শপিংয়ের ব্যবস্থা।’
এমন খবরে স্বস্তি প্রকাশ করে সিয়াম নামের একজন যাত্রী বলেন, ‘পর্যটন মৌসুমে হাজার হাজার মানুষ মহেশখালী আদিনাথ মন্দির দেখার জন্য আসেন। কিন্তু জেটিতে যখন স্পিডবোট কিংবা ট্রলারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়, তখন বসার কোনো স্থান থাকে না। তীব্র রোদের মধ্যে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ প্রশসংসার দাবিদার। প্রকল্পটি হলে সবার ভোগান্তি কমবে।’
আরেকজন যাত্রী ইয়াসমিন বলেন, ‘মহেশখালী জেটিটি ১ কিলোমিটার হবে। কিন্তু জেটিতে একটি পাবলিক টয়লেটও নেই এবং নামাজ পড়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। পান ভাস্কর্য হলে আশা করছি এই সমস্যা এখন দূর হবে।’
শামসুল আলম নামে এক পর্যটক বলেন, ‘জেটিতে অনেক ভিড়। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বসার কোনো স্থানও নেই। এভাবে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে খুবই কষ্ট হয়।’
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেন, ‘মহেশখালী জেটিতে যাত্রী কিংবা পর্যটকদের দুর্ভোগ লাঘবে বসার স্থান, বিশ্রামের ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, রেস্টুরেন্ট, নামাজের স্থান ও কেনাকাটার ব্যবস্থা থাকবে। এটি দৃষ্টিনন্দন করার মাধ্যমে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়বে, ঠিক তেমনি পর্যটক কিংবা যাত্রীদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পর পানের ভাস্কর্য দিয়ে উন্নয়নের যাত্রা শুরু হলো। এই ভাস্কর্যের নির্মাণকাজ শেষ হলে পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হবে। কক্সবাজারের উন্নয়নে সবার সহযোগিতা দরকার।’
স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ‘বর্তমান সরকার কক্সবাজারকে অনেক কিছু দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের উন্নয়নের জন্য মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এরই অংশ হিসেবে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীকে সিঙ্গাপুরের আদলে রূপ দিতে চায় সরকার।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মহেশখালী জেটিটি জরাজীর্ণ। তাই ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন জেটি নির্মাণের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
উল্লেখ্য, মহেশখালী জেটিতে নানা সুযোগ-সুবিধাসহ পান ভাস্কর্য নির্মাণ প্রকল্পটি এক কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা বিজনেস/এইচ