পবিত্র আশুরা আজ। যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা-কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সারাদেশে পালিত হচ্ছে দিনটি। বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে মহররমের ১০ তারিখ ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
আশুরা শব্দের অর্থ দশম। সৃষ্টির শুরু থেকে নানা ঘটনার কারণে হিজরি মহররম মাসের দশম দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ। সবশেষ ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত হোসাইন (রা.)-এর শাহাদত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে শোকের অন্যতম কারণ।
এ দিনটিতে বিশ্বের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নামাজ-রোজাসহ বিভিন্ন নফল ইবাদত করে থাকেন। শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। দিনটি উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইফা আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল। আজ সরকারি ছুটির দিন।
দিনটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘আসুন পবিত্র আশুরার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সোনার বাংলা তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
মুসলমানরা মনে করেন, মহান আল্লাহতায়ালা এ দিনেই আরশ, কুরসি, লওহ, কলম, আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। এদিনেই আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। পরে শয়তানের প্ররোচনায় তিনি ভুল করলে এদিনেই তাকে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেন, পরে তাকে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন।
হাদিস থেকে জানা যায়, আশুরার রোজা পালনে বিগত এক বছরের গুনাহ মাফ হয়। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মহররম মাসে রোজা ফরজ ছিল। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে রোজা ঐচ্ছিক হিসাবে বিবেচিত হয়। আশুরা দিবসে রোজা পালনের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বাদ জোহর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম। আলোচক ইফার উপ-পরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ইফার পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকার।
এদিকে, তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি ও লাঠি বহন এবং আতশবাজি ও পটকা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ আদেশ তাজিয়া মিছিল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বলবত থাকবে।
ঢাকা বিজনেস/এইচ