পুঁজিবাজার
সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে (৯ জুলাই-১৩ জুলাই) দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর সব মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল বলে সংস্থাটির ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, মূলত মৌল ভিত্তিহীন কিছু কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার কারণে এ সময় মোট লেনদেনও বেড়েছে। পাশাপাশি কিছু বিদেশি লেনদেন বাড়ার কারণেও বাজার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ছিলো সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ২২ লাখ ২৭ হাজার ২৭ টাকা। গত সপ্তাহে (২ জুলাই-৭ জুলাই) মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৫ কোটি ৭৪ লাখ ৮২ হাজার ১৫৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মোট লেনদেন বেড়েছে ১৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৫১ কোটি ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪০৫ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৭১৭ কোটি ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩১ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে মোট ৪০৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছিল। আর সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছিল সমপরিমান অর্থাৎ ৪০৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৭০টির, কমেছে ২৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। তবে ১২টি কোম্পানি লেনদেনে অংশগ্রহণ করেনি।
ডিএসই সূত্রে আরো জানা গেছে, ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে ছিল ৬ হাজার ৩৪১ দশমিক ১০ পয়েন্ট। আর এর আগের সপ্তাহে ছিল ৬ হাজার ৩৩৪ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক বেড়েছে ৬ দশমিক ৩১ পয়েন্ট। এবং ০ দশমিক ৩০ পয়েন্ট শতাংশ বেড়েছে সূচক। ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৩৭৯ দশমিক ৪২ পয়েন্ট। আর এর আগের সপ্তাহে ছিলো ১ হাজার ৩৭৫ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ১৬ পয়েন্ট। এবং ০ দশমিক ৩০ পয়েন্ট শতাংশ সূচক বেড়েছে। ডিএস৩০ সূচকও ঊর্ধ্বমুখী। সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে ডিএস৩০ সূচক এসেস দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৭ দশমিক ০৩ পয়েন্ট। আর এর আগের সপ্তাহে ছিল ২ হাজার ১৯১ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে এক্ষেত্রে সূচক বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট। এবং ০ দশমিক ২৫ শতাংশ সূচক বেড়েছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের অর্থ সম্পাদক মো. সাজ্জাদুর রহমান ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘বাজারে বিদেশি ট্রানজেকশন বেড়েছে। যার কারনে বাজার মোটামুটি পজেটিভ ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। যদিও বাজার মূলধন কিছুটা কমেছে সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে। তারপরেও বাজারে কিছুটা সস্তি ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের মনে।’
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, সিএসইতেও সপ্তাহের ব্যবধানে মোট লেনদেন বেড়েছে। সদ্যবিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ৮৬ কোটি ১৪ লাখ ২৮ হাজার ১৪১ দশমিক ৬০ টাকা। আর গত সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ৮৪ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার ৪০৫ দশমিক ৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৩৬ দশমিক ১ টাকা। চলতি সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩১৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশগ্রহণ করেছিল। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৭০টির, কমেছে ৯৫টির, অপরিবর্তিত ছিলো ১৪৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দর। সিএসইতে প্রায় সব সূচক ছিলো ঊর্ধ্বমুখী। সিএএসপিআই সূচক সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে এসে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৭৩১ দশমিক ৮৮১১ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিলো ১৮ হাজার ৭২০ দশমিক ৮০৯৯ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক বেড়েছে ০ দশমিক ০৫৯১ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বিদায়ী সপ্তাহে ছিলো ১৩ হাজার ৩৫৬ দশমিক ০৯১৬ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিলো ১৩ হাজার ৩৯৮ দশমিক ২২৭৫ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে সূচক কমেছে ০ দশমিক ০৫৯১ শতাংশ। সিএসসিএক্স গত সপ্তাহের তুলনায় সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে বেড়েছে ০ দশমিক ০০৯০ শতাংশ। সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে ০ দশমিক ০৫ শতাংশ। সিএসআই সূচক বেড়েছে ০ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং সিএসইএসএমইএক্স বেড়েছে ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
ডিএসই’র পরিচালক শাকিল রিজভি ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘স্বাভাবিক নিয়মেই মার্কেট কিছুটা ভালো হয়েছে। মৌলভিত্তিহীন কোম্পানিগুলোতে অনেকেই বিনিয়োগ করছেন। ব্লক মার্কেটটা কিছুটা গতিশীল হয়েছে। যেকারনে শেয়ার মার্কেটের অবস্থা কিছুটা ভালো।’
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর মূখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘মার্কেট ভালো কিংবা মন্দ হওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা থাকে না। তারপরেও যদি বলতে হয়, তবে আমার জানামতে, বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। ফলে সূচক ও মোট লেনদেন বেড়েছে।’
ঢাকা বিজনেস/এনই