বাগেরহাটে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত দু’সপ্তাহে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২০ জন। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) নতুন করে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। বিকাল পর্যন্ত জেলা হাসপাতালে ৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, জ্বর ও সর্দিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। বৃহস্পতিবার এই হাসপাতালে জ্বর ও সর্দিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্ধশত রোগী ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি রোগীদের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। বিকাল পর্যন্ত ৮ জন ডেঙ্গু রোগী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বুধবার (৫ জুলাই) এই হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ জন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ নতুন করে আরও ৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াও ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে কয়েকজন নিজ বাড়িতে, কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। রোগীরা জেলার বিভিন্ন এলাকার বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসিম কুমার সমাদ্দার বলেন, ‘জনবল সংকট থাকায় ডেঙ্গুসহ অন্য রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে জেলা হাসপাতাল ছাড়া উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গ রোগী শনাক্ত হয়নি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, আলাদা কোনো ওয়ার্ড না থাকায় জ্বর ও সর্দিজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গেই ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীর চাপ বেশি থাকায় অনেকেই ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফ্লোরে মশারির ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে ভর্তি অন্যদের মধ্যে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন রোগীদের স্বজনেরা।
দায়িত্বরত সেবিকারা জানিয়েছেন, ফ্লোরে থাকা ডেঙ্গু রোগীদের মশারি টানানোর ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ডা. অসিম কুমার সমাদ্দার জানান, কোরবানির ঈদের ছুটিতে নানাপ্রান্ত থেকে মানুষ বাগরহাটে ডেঙ্গু নিয়ে এসেছেন। হঠাৎ করে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এমন ধারণা করছি। সে কারণে এখন প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। রোগীর চাপ বেশি থাকায় বেড সংকটের কারণে অনেকেই ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জনবল সংকট থাকায় ডেঙ্গুসহ রোগীদের স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়া অন্য উপজেলাগুলোতে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়নি। ডেঙ্গু যাতে জেলায় ছড়িয়ে না পড়ে সে লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন সভা সেমিনারে সচেতনতামূলক বক্তব্য দিচ্ছি। বাড়িঘর, বাজার ও রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে।’
ঢাকা বিজনেস/এইচ