১৮ মে ২০২৪, শনিবার



৫২ মণের ‘মানিককে’ বিক্রি করতে পারেননি হামিদা

আব্দুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইল || ০২ জুলাই, ২০২৩, ০৯:০৭ এএম
৫২ মণের ‘মানিককে’ বিক্রি করতে পারেননি হামিদা


এবারও কোরবানি ঈদে ৫২ মণ ওজনের গরু মানিককে বিক্রি করতে পারেননি হামিদা খাতুন। এতে তিনি হতাশার মধ্যে রয়েছেন।

হামিদা বলেন, ‌‘লোকবল সংকটসহ নানা অসুবিধার কারণে এবার মানিককে ঢাকার হাটে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বাড়ি থেকে গরুটি বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যে দু’একজন ক্রেতা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন দেখে যোগাযোগ করেছেন, তারা পোল্ট্রি দামে গরুর মাংস কিনতে চান। নামমাত্র কেজি দরে গরু কিনতে চেয়েছিলেন অনেকেই।’

জানা যায়, উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে হামিদা আক্তার। তারা তিন বোন। ভাই না থাকায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকেই। বাড়িতেই একটি মুদি দোকান করেছেন। সেখানে ফ্লেক্সিলোড, বিকাশ ও দর্জির কাজও করেন তিনি। উপার্জনের বড় অংশই ব্যয় করেছেন মানিকের পেছনে। হামিদা টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগ থেকে অনার্স করেছেন।

হামিদ জানান, তার গরুটি ৫২ মণ ওজনের। ঈদের আগে মুন্সিগঞ্জের একজন ফোনে গরুটির দরদাম করেন। সর্বশেষ ১৩ লাখ টাকায় গরুটি দাম করা হয়। তবে ঈদের আগে ৩ লাখ টাকা দিয়ে ঈদের পরে ১০ লাখ দিতে চেয়েছিলেন ওই ক্রেতা। কিন্তু বাকিতে হামিদা গরুটি বিক্রি করতে রাজি হননি। এ ছাড়াও, কয়েকজন দাম করেছিলেন। সর্বশেষ সাড়ে ৮ লাখ টাকা দাম করেছিলেন একজন কিন্তু পরে আর আসেননি।

তিনি বলেন, ‘একজন ক্রেতা যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি ৩০০ টাকা কেজি দর হিসাবে দাম করেছিলেন। কিন্তু এত কম দামে বিক্রি করবো না। এছাড়া ঈদের পরেও কয়েকজন ফোন করেছিলেন। স্কেল ওজনের মাধ্যমে কেউ ১৫০ টাকা কেউ ২০০ টাকা কেজি দাম করেছিলেন। এ বছরও মানিককে লালন-পালন করবো। আমার খামারে আরও চারটি গরু রয়েছে। গরু হাটে নিতে ৫-৬ জন মানুষের প্রয়োজন হয়। কিন্তু লোকজনের অভাবে নেওয়া হয়নি। এর আগের বছরও একই কারণে মানিককে বিক্রি করতে পারিনি।’ 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বাহাউদ্দীন সারোয়ার রিজভী বলেন, ‘তার ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি বিক্রির জন্য সবার্ত্মক চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকেই গরুটি বিক্রি করতে হামিদাকে ফোন করেছিলেন। এছাড়া দামও করেছিলেন কিন্তু তিনি গরুটি বিক্রি করেননি। তিনি গরুর ওজন ৫২ মণ বললেও বাস্তবে ওজন এত হবে না।  প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকায় তার বাড়ি। তারপরও নিয়মিত তার খামারে গিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ পর হামিদার গরুটি যদি কেজি দরে বিক্রি করতে চান তাহলে যেকোনো কোম্পানির কাছে বিক্রি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরু এত বড় করা ঠিক হয়নি। এত বড় গরু তার বাড়ি থেকে বের করাও কঠিন হবে।’

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন