খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকলেই হলুদ সূর্যমুখী ফুলের দেখা মিলবে। সবুজের মধ্যে হলুদ ফুলগুলো অপরূপ সৌন্দর্যের উৎস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রস্ফুটিত সূর্যমুখীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মৌমাছি-প্রজাপতি যেমন ছুটে আসছে, তেমনি বিমোহিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরাও।
কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। হলের আশেপাশের পতিত ও আগাছাপূর্ণ ঝোপ পরিষ্কার করে সেখানে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বছরজুড়েই যাতে বিভিন্ন রকম ফুল গাছ রোপণ করা যায়, সে উদ্যোগ নেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সালমা বেগম। এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন দিকনির্দেশনাও দেন।
উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ বছর প্রথম সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফুল ফুটেছে। যা দেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অতিথিরাও মুগ্ধ। সৌন্দর্য বৃদ্ধির অংশ হিসেবে এবারই প্রথম বঙ্গমাতা হলে সূর্যমুখীর বীজ বপন করা হয়। ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। হলের প্রধান ফটক থেকে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলবে সূর্যমুখীর। বঙ্গমাতার ম্যুরালের সামনে, হলের প্রবেশদ্বারের সম্মুখে, হলের বাম ও ডানপাশে সূর্যমুখীর ছড়াছড়ি।
বঙ্গমাতা হলের ফুলের বীজ বপন এবং এর দেখভাল করেন মালি অচিন্ত সাগর দাশ। তিনি বলেন, হলের প্রভোস্টের দিকনির্দেশনায় গত বছর নভেম্বরে সূর্যমুখীর বীজ বপন করা হয়। প্রায় তিন মাস পর ফেব্রুয়ারিতে সূর্যমুখী ফুল ফুটতে শুরু করে। এই ফুল পুরো মার্চ পর্যন্ত পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ১ কেজি সূর্যমুখীর বীজ এনে প্রায় ৬ শতক জমিতে বপন করা হয়। এতে প্রাকৃতিক কম্পোস্ট সার ব্যতীত অন্য কোনো সার ব্যবহার করা হয়নি, তবুও ফলন আশানুরূপ হয়েছে। আগামীতে এই ফুল থেকে বীজ সংগ্রহ করে আরও বেশি পরিমাণ জায়গায় বপন করা যাবে।
বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সালমা বেগম বলেন, সারাবছরই যাতে এখন নানা বর্ণের নানা রঙের ফুলে শোভিত থাকে বঙ্গমাতা হলের প্রাঙ্গণ, সে বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। এবারই প্রথম সূর্যমুখীর বীজ বপন করা হয়। তাতে ভালো ফুল ফুটেছে। আগামীতে আরও বেশি স্থানজুড়ে সূর্যমুখীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা বপন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্যান্সার, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রক সূর্যমুখী তেলে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। তেলের চাহিদাও ব্যাপক। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার বিষয়বস্তুও হতে পারে এই সূর্যমুখী। আগামীতে যদি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় এই ফুল চাষ করা যায়, তবে সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি গবেষণা ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী জমি পতিত না রাখার যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা প্রতিপালন করা হবে।
ঢাকা বিজনেস/এম