১৮ মে ২০২৪, শনিবার



শিল্প-সাহিত্য
প্রিন্ট

অভ্যর্থনা ও অন্যান্য কবিতা

মিজানুর রহমান বেলাল || ১২ মার্চ, ২০২৩, ১১:৩৩ পিএম
অভ্যর্থনা ও অন্যান্য কবিতা


স্বপ্নচাষী
স্বপ্নরাতের মধ্যরেখায় ঝুলে থাকে বারোমাস।
আকাশের নীল মানচিত্র খুঁজতে গিয়ে জেনেছি—
ঝুলে থাকা স্বপ্ন আত্মঘাতী বিস্ফোরক।

শ্রমপিপাসু কঙ্কাল সময়ের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেছে—
প্রতিটি স্বপ্ন পূরণের পেছনে কারো না কারও
দৃশ্য-অদৃশ্য
করুণা নিবেদিত থাকে মনণাগারের বারান্দায়;
ঠিক যেন ফুটপাতে ক্ষুধার্ত ভিখারীকে
ব্যাগভর্তি হাসি উপহার দেবার মতো বিষয়।

স্বপ্ন সংক্রান্ত বিশ্বাস মাঝে-মাঝে 
আত্মসমর্পণের কানাগলি দিয়ে
উড়ন্ত মেঘের জমিনে অনবদ্য
স্বপ্নচাষী হতে বলে—স্বপ্ন নিয়েই নাকি মানুষ বেঁচে থাকে।
ঘুমের রঙিন ঠোঁটে সংক্রমণে কেবলই

উড়ে উড়ে আসবে নৈঃশব্দের বোবা আলো 
সেই আলোয় আলোকিত হবে স্বপ্নচাষীর স্মৃতির পৃথিবী।

অভ্যর্থনা 
এ কোন অভ্যর্থনার ভার কাঁধের ওপর তুলে দিলে না বুঝে।
মানুষের জ্ঞান নিয়ে তর্কে যেতে চাই না—মানুষ তো আবেগময়; 
স্বপ্নের জৌলুসে ঘুম চোখে জেগে থাকে মধুভরা ফুল-বাগানে।
মধু আর মানুষের সম্পর্ক বুঝতে কখনো রাত জেগে থাকিনি
তবে কেন অভ্যর্থনার বৃষ্টিতে ভিজতে বলছ?
সেই কবেই বৃষ্টি—দুঃখী মানুষের চোখের চাতালে খুলেছে
উদারতার পাঠশালা; কখনো খয়েরি-কখনো বেগুনি।

উদারতার মহাশূন্যে উড়ন্ত মেঘ নামে ডেকো না কিংবা
নতুন করে জ্ঞানী হতে বলো না; জ্ঞান বারবার অন্ধ হতে বলে।
যে দিন চাঁদ আর সূর্যের পার্থক্য মুখস্থ করেছি না বুঝে
সে দিন থেকে নাকি জন্মান্ধের অসুখে অসুস্থ,বড্ড বিষণ্ন
যদি তাই হয়—তাতেই বেশ আছি।

নতুন করে কোনো অভ্যর্থনার গল্প বলো না—কানের দরজা তালাবদ্ধ।

বেঁচে থাকার গল্প 
বাবার গ্রামীণ চেকের গামছা থেকে ফসলের গন্ধ পাই
শোকে বিবর্ণ ঘরময়
চাষমগ্ন হাত
সবুজ সবজিবাগানের সুগন্ধিযুক্ত ঘামার্ত মুখ
বারবার এই গামছা দিয়ে মুছেছে ঘামবিন্দু কণা।

গামছার জমিন জুড়ে কত অগণিত স্নেহস্মৃতির মিনার
আদর্শ সঙ্গীতের ইন্দ্রজাল বিছিয়ে দিয়েছে হৃদয় আঙিনায়।

জননী পান-সুপারি নিয়ে নিয়ে প্রহরপর্ব বরণ করে নেই
দুঃখ করে বলে—তোর বাবা বেঁচে থাকলে
গোলা ভরা ধান সুখী সংসারের মন্দিরা বাজাতো।
আজ বাবা নেই—বাবার গামছা স্মৃতিফ্রেমে বেঁধে রেখেছি
বেঁচে আছি—আমি ও জননী।



আরো পড়ুন