২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার



কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল

তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজার || ০৯ মার্চ, ২০২৩, ১১:০৩ পিএম
কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল


শবেবরাত ও দোলপূর্ণিমাসহ সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে। কক্সবাজার সৈকতসহ পার্শ্ববর্তী পর্যটন স্পটগুলোতে কিলোমিটারজুড়ে মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। বলতে গেলে শহর এখন পর্যটকদের দখলে। রমজানের আগে হয়তো আর ছুটি নেই, তাই এত পর্যটক দেখা যাচ্ছে। 

শবেবরাত ও দোলপূর্ণিমা উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বন্ধ টানা তিন দিন। এরই মধ্যে যোগ হয়েছে শুক্র-শনিবারের ছুটি। তবে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার অফিস আদালত খোলা থাকলে ও ছিল ঢিলেঢালা ভাব। তাই ব্যবসায়ী চাকরিজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী সবাই ছুটে এসেছেন কক্সবাজারের তীরে। 

কথা বলে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীদের মধ্যে কেউ কেউ (৯ মার্চ বৃহস্পতিবার) অফিস আদালত খোলা থাকলেও ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। এবার স্বাধীনতা দিবস পড়ে গেছে রমজানে তাই সিয়াম সাধনার এসময় মানুষ খুব বেশি ভ্রমণ করেন না। হয়তো সে কারণে এ সুযোগকে কাজে লাগাতে ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় করেছেন। তাদের অনেকেই আগাম বুকিং নিয়েছেন হোটেল, মোটেল ও কটেজগুলোতে। ব্যয়বহুল জেনেও অনেকে আগাম টিকিট কেটেছেন। সেন্টমার্টিনেও এবার আগাম কিছু বুকিং পেয়েছেন সেখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা।

আজ বিকালে কক্সবাজার কলাতলী শহরের সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা বা বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত কয়েক'শ পর্যটক। সকাল থেকে হোটেল-মোটেলে চেষ্টা করেও তারা রুম পেলেও ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে। আবির হোসেন ও মদিনা আহমেদ অপ্সরী নামের দুই পর্যটক বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে ঢাকার উত্তরা থেকে বাসে করে কক্সবাজার এসেছি। আসার সময়ও রাস্তায় দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়েছি। আবার এখানে এসে দেখি কোনো হোটেলে রুম নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে রুম পেলাম।

খুলনা থেকে আসা শামীম বলেন, সকালে বাস থেকে কক্সবাজার কলাতলী ডলফিন মোড়ে নেমেছি। এরপর কলাতলী নামক একটি রেস্তোরাঁয় সকালের নাশতা করতে গিয়ে দেখি সেখানেও পা রাখার জায়গা নেই। পরে পাশের একটি রেস্তোরাঁয় ব্রেকফাস্ট করেছি। এরপর রুম খুঁজতে যে হোটেলেই যাই সবার একটি কথা রুম খালি নেই। শেষমেষ টমটম চালকের সহায়তায় কলাতলীর ভেতরে আমারী রিসোর্টে পেয়ে গেলাম রুম। তবে ভাড়া একটু বেশি, তবুও রুম পেয়ে আমরা খুশি।

তারা বলেছেন, সেন্টমার্টিনেও পর্যটকদের ভিড় রয়েছে বলে জানা গেছে। পরের দিন যাবো সেন্টমার্টিন, সেখানে রুমের ক্রাইসিস। তারপর কর্ণফুলী জাহাজের পরিচালক আমাদের যাতায়াতের টিকেটের ব্যবস্থা করে দিলেন, আর সেন্টমার্টিনে একটি রিসোর্ট বুকিং করে দিলেন। তিনি হোটেল ও জাহাজে আমাদের ১৫ শতাংশ হারে ডিসকাউন্টও দিলেন।

 এ দিকে সাতক্ষীরা থেকে এসেছেন শিক্ষা সফরে অধ্যাপক আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল। তারা বলেন, রুম না পেয়ে ঘুরতে ঘুরতে গেলাম অভিজাত হোটেল সি-প্যালেসে। এই হোটেলের ম্যানেজার আশরাফ জামান বলেন, আমার হোটেলে ৫০টি রুম আছে। সব এক সপ্তাহ আগেই বুকিং হয়ে গেছে। অনেক পর্যটক রুমের জন্য আসছেন। অনেককে না করতে হয়েছে। আমি তাদের পাশের হোটেল ইউনি রিসোর্টে রুমের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

কক্সবাজার কলাতলী হোটেল মোটেল জোনের সভাপতি মুকিমখাঁন জানান, ‌শেষ মৌসুমে প্রচুর পর্যটক পেয়ে তারা খুবই আনন্দিত। পর্যটকদের কোথাও কোনো অসুবিধা হলে হেল্পডেস্কে এসে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ও হোটেল কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও রয়েছে সব পর্যটন স্পটে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা ২৪ ঘণ্টা মাঠে আছি। যেখানে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে অভিযান চলমান রয়েছে। সব মিলিয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্বদা প্রস্তুত কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

বসন্তের শেষ মৌসুমে পর্যটকরা কক্সবাজারে ছুটে আসছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে মাঠে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মুহম্মদ শাহিন ইমরান।

ঢাকা বিজনেস/এম



আরো পড়ুন