মেয়েরা সাধারণত সালোয়ার-কামিজ বা শাড়ি পরে। কিন্তু পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে মেয়েরা এখন শার্ট, প্যান্ট বা ফতুয়াও পরে। মেয়েদের এসব জামার বোতাম সবসময় বাম দিকে থাকে। এই শীতে ব্যবহৃত জ্যাকেট বা সোয়েটারের বোতামও থাকে বামদিকে। কিন্তু ছেলেদের শার্ট বা জ্যাকেটের বোতাম থাকে ডানদিকে। কিন্তু কেন?
ছেলে-মেয়ের শার্টের বোতামের এই আলাদা দিক কেন তা নিয়ে রয়েছে বহু তথ্য, কোনোটি আবার বেশ মজারও৷ নিচে দেওয়া হলো তেমনই কিছু শোনা কথা।
১. রাশিয়ার জারশাসক নেপোলিয়ন বোনোপার্টের কথা আমরা সবাই জানি। যদি ইতিহাসের দিকে একটু ফিরে তাকানো যায়, তাহলে অনেকেরই মনে পড়বে, এই বোতামের দিক পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নেপোলিয়নে নাম৷ বলা হয়ে থাকে, নেপোলিয়ন বোনাপার্টের প্রায় সব ছবিতেই নাকি তার ডান হাত কোটের ভেতরে ঢোকানো থাকতো৷
মনে করা হয়, কোটের বোতাম বাম দিক থেকে ডানদিকে খুলতে হলে এই ধরনের একটি পোজ চলে আসে৷ আবার ওই সময় মেয়েদের ডানহাতও নাকি সেভাবেই থাকতো৷ আর এই দুই বিষয় নিয়ে ওই সময় কৌতুকও কম হয়নি৷ এই কৌতুকের কথা নেপোলিয়নের কানে যেতেই তিনি নাকি মেয়েদের পোশাকে বোতাম বাম দিকে নেওয়ার নির্দেশ দেন৷ আর তখন থেকেই নাকি এই রীতি চলে এসেছে!
২. অনেকের মতে, মেয়েরা ছেলেদের সমান সমান বোঝানোর জন্যই একই ধরনের শার্ট পরার প্রথা চালু হয়৷ কিন্তু তার মধ্যেও বৈচিত্র্য তো আনতেই হবে। আর এই বৈচিত্র্য আনার জন্যই বোতাম উল্টোদিকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ আর শার্টের বোতামের দিক আলাদা হওয়ায় ছেলে-মেয়ের পোশাক বুঝে নেওয়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা হতো দর্জিদের৷
৩. প্রাচীনকালে চলাচলের অন্যতম বাহন ছিল ঘোড়া। পুরুষরা ঘোড়া নিয়ে ছুটলে রাস্তার বাঁদিক দিয়ে যেতেন। ডান দিকে তলোয়ার চালাতে সুবিধা হয়। তাই সেটি রাখা থাকতো বামদিকে-কোমরে। আর তলোয়ার বের করার সময় যেন কোটের বোতামে আটকে না যায়, তার জন্যই নাকি বোতাম বসানো হতো ডানদিকে।
৪. অন্য একটি মত হলো, মহিলারা তাদের সন্তানকে যেহেতু বামদিকে ধরতে হয়, তাই ডান হাত খালি থাকে। বাচ্চার দুগ্ধপানের সময় বোতাম ডানদিকে থাকলে খুলতে অসুবিধা হতো৷ এই অসুবিধা দূর করতেই নাকি বোতামের দিক পরিবর্তন করা হয়৷
৫. আরও একটি তত্ত্বে বলা হয়, পুরুষরা সাধারণত নিজের জামা নিজেই পরেন, আবার অবস্থাপন্ন পরিবারের মেয়েদের বাড়ির দাসীরাই পোশাক পরিয়ে দিতেন। যেহেতু সেই দাসীদের বেশির ভাগই ডানহাতি বলে ধরে নেওয়া যায়, তাদের সুবিধার জন্যই মেয়েদের জামার বোতাম বাঁদিকে রাখার প্রথাই চালু হয় বলে মনে করে অনেকে৷
নুপুর/এনই/