২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার



অর্থনীতি
প্রিন্ট

ডিপ্লোমা কোর্সের নির্দেশনায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ১২:০২ পিএম
ডিপ্লোমা কোর্সের নির্দেশনায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া


ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ব্যাংকিং ডিপ্লোমা’র শর্ত আরোপে করায় সংশ্লিষ্টরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশ দেওয়ায় তা মানতেই হবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, পদোন্নতিকে নিরুৎসাহিত করতেই এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এমন ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে অবশ্যই ব্যাংকিং ডিপ্লোমা থাকতে হবে। তবে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট নয়—এমন কর্মকর্তাদের জন্য এই শর্ত প্রযোজ্য হবে না। এই নির্দেশনা ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার কথাও বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ২০২০ সালে জারি করা এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এই নির্দেশনার ব্যাপারে ঢাকা বিজনেসের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা অভিমত প্রকাশ করেন। ওয়ান ব্যাংকের সিনিয়র ম্যানেজার আহাদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক পদোন্নতির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করেছে।  আমাদের মূল রেগুলেটর বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন তারা যে নির্দেশনা দেবে, সে নির্দেশনা আমাদের পরিপালন করতে হবে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাঝে এই ব্যাপারে অসন্তুষ্টি থাকতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার বাইরে যাওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই।’

সিটি ব্যাংকের কোম্পানি সেক্রেটারি কাফি খান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক যেটা ভালো মনে করেছে, সেটা করেছে। একজন ব্যাংকার হিসেবে এই ব্যাপারে ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই।’

ইউনিয়ন ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘ব্যাংকিং ডিপ্লোমায় দুটি পার্ট থাকে। এই ডিপ্লোমা পাস করা খুবই কঠিন। তাছাড়া ৫০ শতাংশ পাস নম্বর পেতে হয়। একজন ব্যাংকারের জন্য এই পাস নম্বর ওঠানো খুবই মুশকিল। কারণ তারা কাজ করবে, না কি পড়াশুনা করবে? আর একটা বিষয়, বেশিরভাগ ব্যাংক কর্মকর্তা ওপেন নকল করে এই ডিপ্লোমা পরীক্ষা দিয়ে থাকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ভালো লিখলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পাস করাতে চায় না। প্রতিটা সাবজেক্টের জন্য ১ হাজার ৮০০ টাকা করে জমা দিতে হয়।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মূলত, ফেলের মাত্রা বেশি হলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে বেশি টাকা জমা হবে। এছাড়া, আরও একটি বিষয় আছে। প্রমোশনের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ফেল করিয়ে দেয়। কারণ একজন কর্মকর্তা প্রমোশন পেলে তাকে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে; যা সাধারণত দিতে চায় না কর্তৃপক্ষ।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মূখপাত্র মেজবাউল হক ঢাকা বিজনেসকে বলেন,‘ব্যাংক কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্স থাকে। ব্যাংকিং ডিপ্লোমাও একটি প্রফেশনাল কোর্স। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যাংক এর বাস্তবায়ন করবে। আর যেসব ব্যাংক কর্মকর্তার দক্ষতা যত বেশি হবে, তারা তত বেশি বেনিফিটেড হবেন, এটাই স্বাভাবিক।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন