০১ জুলাই ২০২৪, সোমবার



শিল্প-সাহিত্য
প্রিন্ট

বুড়ি ও পরী: পর্ব-৫

সরোজ মেহেদী || ০৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ০৬:৩২ পিএম
বুড়ি ও পরী: পর্ব-৫


পর্ব-পাঁচ
ছেলের ডাকে সম্বিত ফিরে পায় আজফর আলী। 

বাবা তোমার সাথে কথা আছে। বাসায় চল।

আজফর আলী ছেলের পিছু পিছু হাঁটে। উলফাত দাদুর হাত ধরে। সঙ্গে সঙ্গে। 

তারপর রুমে এসে নিজের কাপড় চোপর গুছাতে শুরু করে আজফর আলী। উলফাত এবার আরও বেশি অবাক হয়। 

কি করছে এসব দাদু। সে দাদুকে গুছাতে মানা করে। বলে তোমার কি কি লাগবে বল, আমি গুছিয়ে দেই। তুমি পারবে না দাদুনি। 

আজফর আলী মুচকি হাসে। নাতনির থুতনি ধরে আদর করে। 

-নাফিস শোন 

বলো বাবা।

-তোর শাশুড়িরা কখন আসবে। 

কাল আসার কথা ছিল। একটু আগে নাকি ফোন করে বলেছে তারা রওনা দিয়েছে। তার মানে রাতে এসে পৌঁছাবে। 

-আমি এখন কই যাব? 

-যে হোটেলে তোমাকে রেখে আসি। সেখানে কয়েকদিন থাক। তারা চলে গেলে আমি গিয়ে নিয়ে আসব। 

-একটা কাজ করতে পারবি বাবা?

বলো। 

-আমাকে গফরগাঁও রেখে আয়। আমি ওখানে কয়েকটা দিন থেকে আসি। তোর আম্মা, আমার আম্মা’র কবর ওখানে। কতদিন কেউ জিয়ারত করে না কে জানে। বাড়িঘরেওতো কোনো আপনা পুরুষ নাই। মুর্দা মানুষেরা নাকি জীবিত স্বজনের অপেক্ষায় থাকে। থেকে থেকে কান্দে। আমার ক’দিন ধরে খুব খারাপ লাগতেছে। আমাকে একটু রেখে আসার ব্যবস্থা কর বাবাই। 

আজফর আলীর চোখে কালো চশমা। চোখের সমস্যার কারণে ডাক্তার দিয়েছিল বলে বারবার লজ্জ্বার হাত থেকে বেঁচে যায়। এবার তার গলা বদ্ধ হয়ে আসলেও চোখ দেখে ফেলার ভয় নেই। সে আর কথা বলতে না পেরে চুপ করে থাকে। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে নাফিসও। তারপর বলে উঠে, এই সময় তোমাকে কিভাবে রেখে আসব বাবা। আর তুমি ওখানে গিয়ে কই থাকবা? খাবা কি? কে দেখবে তোমাকে? তুমিতো একা একা কিছুই করতে পার না। হাত পা ভেঙে আরেক ঝামেলা বাধাবা। 

-ব্যবস্থা একটা হবে। আজগরের মেয়েটা আছে। ও আমাকে ফেলে দেবে না। তুই আমারে রেখে আসার ব্যবস্থা কর। তোর মা’র কথা খুব মনে পড়ছে। 

নাফিস চুপ করে থাকে। আজফর আলী লাগেজ গুছনোতে মন দেয়। 

চলবে...

বুড়ি ও পরী: পর্ব-৪



আরো পড়ুন