তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সিরিয়া সীমান্তের কাছে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ১০০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা দ্রুতই বাড়ছে। তুরস্কে এখন পর্যন্ত ৯১২ জন নিহত হয়েছেন। আর দুই হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে দেশটিতে অন্তত ২৩৭ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া ছয় শতাধিক আহত হয়েছেন।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৮। এটি স্থানীয় সময় ভোর সোয়া চারটার দিকে আঘাত হানে। গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১৭.৯ কিলোমিটার।
ভূম্পিকম্পটি রাজধানী আঙ্কারা এবং তুরস্কের অন্যান্য শহরেও অনুভূত হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট পুরো অঞ্চল জুড়েই কম্পন অনুভূত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, অনেক ভবন ধসে পড়েছে এবং বহু মানুষ ভেতরে আটকা পড়েছে।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সুলেইমন সইলু বলেন, ‘১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাতিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির ও কিলিস। প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের শিক্ষারী মোহামাদ এর ছামা বলেন, ‘আমি কিছু একটা লিখছিলাম। হঠাৎ করেই পুরো ভবন কাঁপতে শুরু করে। আমি বুঝতে পারছিলাম না যে কী হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ভয় হচ্ছিল যে সেগুলো ভেঙে পড়বে। প্রায় ৪-৫ মিনিট ধরে এটা চলে। পুরো বিষয়টি ভয়ঙ্কর ছিল।’
গাজা উপত্যকায় থাকা বিবিসির প্রযোজক রুশদি আবুয়ালুফ জানান, তিনি যে বাড়িতে থাকেন, সেখানে প্রায় ৪৫ সেকেন্ড ধরে কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় সিসমোলজিস্টরা ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭.৮ ছিল বলে জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, ভূমিকম্পটি আঘাত হানার কয়েক মিনিট পরেই দ্বিতীয় আরেকটি কম্পন অনুভূত হয়।
তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটিতে অবস্থিত। এর আগে, ১৯৯৯ সালে দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
ঢাকা বিজনেস/এনই/