প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের পর দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এই ঘটনা ঘটে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
৭৫ বছর বয়সি প্রবীণ রাজনীতিবিদ হান বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছেন। তিনি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন প্রশাসনের অধীনে উচ্চপদে কাজ করে আসছেন।
ইউন সুক-ইওলের অভিশংসন
এর আগে সামরিক আইন জারির জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট শনিবার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে অভিশংসন করেছে। তার ক্ষমতা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। যার ফলে সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সুকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিত্ব
প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক মেরুকরণের মধ্যে এক ব্যতিক্রমী নেতা। তিনি দেশটির সংরক্ষণশীল ও উদারনৈতিক দলসহ বিভিন্ন প্রেসিডেন্টের অধীনে কাজ করেছেন। তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা তাকে দেশটির সংকট মোকাবিলায় একটি নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসাবে উপস্থাপন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করা ব্যক্তিত্ব। তিনি এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সচিব, প্রেসিডেন্ট রোহ মু-হিউনের অধীনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সৌদি আরামকোর দক্ষিণ কোরিয়ান ইউনিট S-Oil-এর বোর্ড সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সুর সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো- উত্তর কোরিয়ার হুমকি। পারমাণবিক অস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি ক্রমাগত নিরাপত্তা হুমকি। এছাড়াও দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং আস্থাহীন বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে তাকে।
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান স্পষ্ট করে উল্লেখ করেনি যে, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কতটা ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার ভূমিকা মূলত সরকারকে অচলাবস্থা থেকে রক্ষা করার জন্য সীমিত রাখা উচিত। অন্যদিকে অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সামরিক আইন পরিকল্পনায় ভূমিকার জন্য তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু হতে পারে।
দেশটির সাংবিধানিক আদালত যদি ইউন সুক-ইওলকে অপসারণ করে। তবে ৬০ দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হান ডাক-সু তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং নিরপেক্ষ ভাবমূর্তির মাধ্যমে এই সংকটকালীন সময়ে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। দেশের ভবিষ্যৎ তার দক্ষতার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।