২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



বিশ্বব্যাপী রেকর্ড ১২ কোটি মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ১৩ জুন, ২০২৪, ০৪:০৬ পিএম
বিশ্বব্যাপী রেকর্ড ১২ কোটি মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ


সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ কোটি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ। বিশ্বসংস্থাটি আরও বলছে, ক্রমবর্ধমান সংখ্যাটিকে ‘বিশ্বের রাষ্ট্র সমুহের ওপর ভয়ঙ্কর অভিযোগ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। 

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, বিশ্বব্যাপী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি আবার পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গাজা, সুদান এবং মিয়ানমারের মতো জায়গায় সংঘাতের ফলে আরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যা এখন জাপানের সমতুল্য।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সংঘাত এখনও ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির একটি বড় ধরনের কারণ’।

ইউএনএইচসিআর এক প্রতিবেদনে বলেছে গত বছরের শেষে, ১১৭.৩ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এপ্রিলের শেষের দিকে, সংখ্যাটি আরও বেড়ে গিয়েছিল। বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ১২ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় বসবাস করছে।

সংস্থাটি বলেছে, সংখ্যাটি এক বছর আগের ১১ কোটি থেকে বেড়েছে এবং টানা ১২ বছর ধরে বেড়ে চলেছে। নতুন এবং পরিবর্তনশীল সংকটের সংমিশ্রণ এবং দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলোর সমাধানে ব্যর্থতার মধ্যে ২০১২ সাল থেকে প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। গ্র্যান্ডি এএফপি’কে বলেছেন, আট বছর আগে যখন তিনি চাকরিটি নিয়েছিলেন তখন উচ্চ স্থানচ্যুতির পরিসংখ্যানে তিনি হতবাক হয়েছিলেন।

গ্র্যান্ডি সংকটের একটি স্পষ্ট বৃদ্ধির দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে জনসংখ্যার আন্দোলনকে প্রভাবিত করছে এবং সংঘাতের দিকে পরিচালিত করছে তাও তুলে ধরেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইউএনএইচসিআর গত বছর ২৯টি দেশে ৪৩টি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে, যা কয়েক বছর আগে ছিল তার চার গুণেরও বেশি। বিশেষ করে, গ্র্যান্ডি উল্লেখ করেছেন, আন্তর্জাতিক আইনের ‘সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে যেভাবে সংঘাত পরিচালিত হয়’ এবং ‘প্রায়শই মানুষকে আতঙ্কিত করার নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে। অবশ্যই এটি আরও বাস্তুচ্যুতিতে একটি শক্তিশালী অবদান রাখে।’

গ্র্যান্ডি স্বীকার করেছেন, সেখানে বর্তমানে প্রবণতা কমানোর আশা কম বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতে পরিবর্তন না হলে দুর্ভাগ্যবশত আমি দেখতে পাচ্ছি বাস্তুচ্যুতির চিত্রটি ক্রমাগত বাড়তে থাকবে।’ 

বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, ২০২৩ সালের শেষে ১১৭.৩ মিলিয়ন বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে ৬৮.৩ মিলিয়ন লোক তাদের নিজের দেশে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। শরণার্থী এবং অন্যান্যের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজনের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৩.৪ মিলিয়নে বেড়েছে। সব শরণার্থী এবং অন্যান্য অভিবাসী ধনী দেশে যায় এমন ধারণার বিরুদ্ধে ইউএনএইচসিআর।

সংস্থাটির মতে, ‘অধিকাংশ শরণার্থীকে তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ৭৫ শতাংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বসবাস করে যেগুলো একসাথে বিশ্বের আয়ের ২০ শতাংশেরও কম উৎপাদন করে।

২০২৩ সালের পর থেকে সুদানের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই জেনারেলের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে ৯০ লাখেরও বেশি লোককে বাস্তুচ্যুত করেছে। ২০২৩ সালের শেষে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ সুদানীকে বাস্তুচ্যুত করেছে।  



আরো পড়ুন