রবি মৌসুমে গাইবান্ধার মাঠজুড়ে নজর কাড়ছে বিভিন্ন রঙ-বেরঙের ফসল। এরই ফাঁকে হলুদ রঙে সেজে রয়েছে কৃষকের মাঠ। শীতের সূর্যের ঝলকানিতে ঝলমল হাসিতে রাঙিয়েছে ক্ষেত। যেন হাসিমুখে সূর্যের দিকে আলো ছড়াচ্ছে সূর্যমুখী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ফসলটি চাষে খরচ কম, তবে অত্যন্ত লাভজনক।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) এমনই এক চিত্র দেখা যায়, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামে। যমুনার চরে যেন টগবগ মেজাজে সূর্যের মুখ করে হাসছে সূর্যমুখী। কৃষকের এই শস্য ক্ষেতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ফুলপ্রেমীরা করছে ছোটাছুটি।
জানা যায়, হাসিলকান্দি গ্রামের মৃত আলহাজ মফিজ উদ্দিন সরকারের ছেলে আলতাফ হোসেন সরকার। এক সময়ে ছিলেন কলেজ অধ্যক্ষ। এ থেকে অবসর নিয়ে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষি ফসল উৎপাদনে। নানা ফসল ফলানোর পাশাপাশি এ বছরে বাণিজ্যিকভাবে আবাদ করেছেন সূর্যমুখীর। এ ফসলের দানা থেকে উৎপাদন হয় ভোজ্যতেল। এটির চাহিদা থাকায় ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই তার ক্ষেতের গাছে ফুল এবং ফুলে বীজ আসা শুর হয়েছে। ক্ষেতের সূর্যমুখীর সবুজ গাছে গাছে বড় গোলাকারের হলুদ ফুল চারদিকে যেন এক অপরূপ দৃশ্য ছড়িয়েছে। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য পিয়াসু মানুষ সূর্যমুখী ফুলের দৃশ্য দেখতে আসছে।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সূর্যমুখী সারা বছর চাষ করা যায়। তবে রবি মৌসুমে ভালো হয়। সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতে আবাদ করা যায়। এর বীজ সারিতে বুনতে হয়। হেক্টরপ্রতি ৮-১০ কেজি বীজ লাগে। বীজ বুনা থেকে প্রায় ১০০ দিনের মধ্যে এ ফসল ঘরে তোলা সম্ভব। এতে প্রায় ২ টন দানা সংগ্রহ করা যেতে পারে। এ ফসল থেকে তেল উৎপাদন ছাড়াও গরু-মহিষের খাবার হিসেবে খৈল তৈরী হয়ে থাকে। গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
এদিকে, সূর্যমুখীর ওই ক্ষেত দেখতে আসা মুন্নি আক্তার, সাগর মিয়া ও আখি খাতুন বলেন, থোকা থোকা ফুলে ভরা সূর্যমুখীর সৌন্দর্য আমরা মুগ্ধ হয়েছি। অপরূপ এই দৃশ্য ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে রাখলাম।
কৃষক আলতাফ হোসেন সরকার বলেন, লাভজনক ফসল হিসেবে সূর্যমুখীর আবাদ করেন তিনি। ৫ বিঘা জমিতে এটি চাষ করছেন। বীজ-সার- শ্রমিকসহ অন্যান্য ব্যয় হবে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ফলন ও বাজার দাম ভালো থাকলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা লাভ থাকবে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, সূর্যমুখী চাষ কম খরচে অত্যন্ত লাভজনক। কৃষকদের আরও লাভবান করতে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে আলতাফ হোসেন সরকারকেও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
ঢাকা বিজনেস/এম