০৪ মে ২০২৪, শনিবার



যে-কারণে চমেক হাসপাতালে বেড়েছে রোগী

মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম || ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ০২:০৪ পিএম
যে-কারণে চমেক হাসপাতালে বেড়েছে রোগী


প্রচণ্ড তাপদাহে  জনজীবন অতিষ্ঠ। ফলে নানা রোগের প্রকোপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, শিশু ও বয়স্ক নারী পুরুষ ডায়েরিয়া, জ্বর, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিস ও শ্বাসযন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যার কারণে ভিড় বেড়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালের মেডিসিন ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ  ঘুরে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট বেডের বাইরে মেঝেতে অনেক রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রচুর গরমের ফলে অনেক শিশুকে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। চিকিৎসকরা জানান, ঈদের পরপর রোগীদের চাপ বেড়েছে।

চমেক হাসপাতালে আসা বোয়ালখালী থেকে আসা  বাসিন্দা চেমন আরা বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে বাচ্চা প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত। জ্বরের একদিন পর থেকে বমির সঙ্গে ডায়রিয়া শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার পরীক্ষা–নিরীক্ষা হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।’

আনোয়ারা উপজেলা থেকে আগত আরেক রোগী মুজিবুল হক বলেন, ‘সকাল থেকে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। স্যালাইন খাওয়ানোর পরেও কোনো উন্নতি হয়নি। ২৪ ঘণ্টাতেও অবস্থার উন্নতি না হলে মেডিক্যালে চলে আসি। এখানে পর্যাপ্ত সিট না থাকায় প্রথমে মেঝেতে দুই দিন কাটাতে হয়েছে। পরে একটি বেডে জায়গা হয়েছে। তাও আরেকজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে হচ্ছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘গরমজনিত অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে হলে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে বাইরের আখের রস কিংবা লেবুর শরবত টাইপের পানীয় পান করা যাবে না। তীব্র গরমে শরীর থেকে প্রচুর লবণ বের হয়ে যায়। তাই ওর‌্যাল স্যালাইন ও ডাব খেতে হবে।’

এছাড়া অনেকে বাইরের রোদ থেকে বাসায় গিয়ে ফ্রিজের পানি পান করে কিংবা ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করে। এটি কখনোই করা যাবে না। বাসায় পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল কিংবা পানি পান করতে হবে। না হলে মাথাব্যথা, সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গরমের সঙ্গে মানানসই কাপড়-চোপড় পরতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ছাতা নিতে হবে।’

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ  হাসপাতালের মেডিসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুর রব ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘মেডিসিন ওয়ার্ডে ডায়েরিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। প্রচুর জ্বরের রোগীও পাচ্ছি। এছাড়া অনেক বয়স্ক রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছে।’

শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সুপর্না দাশ বলেন, ‘গরমের সময় শিশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকিতে থাকে। এই সময় সাধারণ সর্দি, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ও আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে। আমাদের ওয়ার্ডে ক’দিন ধরে এ ধরনের রোগীর চাপ বেড়েছে।’

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপদাহ চলছে। এর প্রভাবে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল এবং ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোগীর চাপ বেড়েছে দেড়গুণ পর্যন্ত। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রয়েছে রোগীদের দীর্ঘ সারি।’ 

ঢাকা বিজনেস/এনই



আরো পড়ুন