২১ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার



কুল চেইন উন্নয়নের জন্য সমন্বিত নীতির বাস্তবায়ন চান শিল্প উদ্যোক্তারা

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
কুল চেইন উন্নয়নের জন্য সমন্বিত নীতির বাস্তবায়ন চান শিল্প উদ্যোক্তারা


বাংলাদেশের পচনশীল পণ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরবরাহ ঠিক রাখতে কোল্ড চেইন ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে খাত সংশ্লিষ্টরা।

সমন্বিত কুল চেইন নীতি নির্ধারণ ও কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ীদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে এই খাতের উন্নয়নের জন্যে আহ্বান জানিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) পল্টনের বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ও সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড আয়োজিত এক ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তারা এই আহ্বান জানান।

দেশে বর্তমানে ৪ শতাধিক কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। যেগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোক্তারা চান পেঁয়াজ, টমেটো, গাজর, মাংস, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্য সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোরেজ তৈরিতে নতুন বিনিয়োগ করতে। এ জন্য সরকারের কাছে কম সুদে মূলধন চান এ খাতের উদ্যোক্তারা।

‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সুদ ১৩-১৪ শতাংশ। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে আমরা প্রজেক্ট করলে সেটা লাভজনক করা মুশকিল হয়ে পড়বে। এ কারণে সরকার আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বা বিদেশ থেকে ফান্ড নিয়ে আমাদের ৩-৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয় তাহলে আমরা এ খাতে বিনিয়োগ করতে পারবো।’ তিনি বলেন, ‘দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলোতে ৪টি করে চেম্বার রয়েছে। যেগুলো দুর্বলভাবে ব্যবসা করছে, সেগুলোর একটি বা দু’টি চেম্বারকে বিশেষভাবে পেঁয়াজ বা অন্য পেরিশেবল কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এজন্য দরকার বিনিয়োগ, যে সহায়তাটুকু সরকারের কাজ থেকে আমরা চাই।  সাপ্লাই চেইনে কোল্ড স্টোরেজ আমাদের কি ভুমিকা রাখে তা নিয়ে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ও সেভর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড তিনদিন ব্যাপি বসুন্ধরার আইসিসিবিতে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। মেলাটি ১৬ মে থেকে ১৮ মে পর্যন্ত চলবে বলে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেয়া হয়। এতে কোল্ড স্টোরেজের নানা প্রযুক্তির প্রদর্শনী থাকবে।’

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, প্রেসিডেন্ট, ব্রামা ও রেফ্রিজারেশন, এয়ার কন্ডিশনিং এবং কোল্ড চেইন পলিসি ইমপ্লিমেন্টেশন সংক্রান্ত এফবিসিসিআইয়ের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘পুরো একটি কোল্ড স্টোরেজ আমদানি করতে আমাদের এক শতাংশের মত শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু যখন এর একটা পার্টস আমদানি করতে হয় তখন আমাদের এই শুল্ক ১৩০ শতাংশ হয়ে যায়। বিনিয়োগের জন্য এটা একটা বড় সংকট। এটা ৩-৫ শতাংশের মধ্যে হলে ভালো হয়।’

বক্তারা বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলেই সংকট হয়, অথচ আমাদের পেঁয়াজ নষ্ট হয়। এর জন্য স্পেশালাইজড কোল্ড স্টোরেজ দরকার। তরমুজ, আম, টমেটে, গাজরের জন্য কোল্ড স্টোরেজ দরকার। কারণ হাজার হাজার টন এসব খাদ্য পণ্য উৎপাদন করলেও তা একটা সময় মাঠেই নষ্ট হয়। এখানে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্টোরেজ গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, কোল্ড স্টোরেজ শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, নিরাপদ খাদ্যের জন্যও দরকার। কারণ অনেক খাবারে প্রিজারভেটিভ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়, যেটা কোল্ড স্টোরেজে রাখতে হলে দরকার হবে না। এখানেও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফয়জুল আলম চৌধুরী।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘গত বছর কোল্ড স্টোরেজে যেসব আলু সংরক্ষণ করা হয়েছিল সেগুলো ৮-১২ টাকা কেজি দরের আলু ছিল। এবারে যেগুলো রাখা হচ্ছে সেগুলো ২৫-৩০ টাকায় কেনা আলু, কৃষকরা এবার এই দামে আলু বিক্রি করেছে। কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়ে এসব আলু যখন বাজারে আসবে তখন এর দামও বেশি হবে।’




আরো পড়ুন