২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



ইরি-বোরো চাষে ধুম পড়েছে চুয়াডাঙ্গায়

মিজানুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা || ২১ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম
ইরি-বোরো চাষে ধুম পড়েছে চুয়াডাঙ্গায়


আমন ঘরে তোলার পর এবার ইরি-বোরো চাষে মাঠে নেমেছেন চুয়াডাঙ্গার ৪ উপজেলার কৃষকরা। মৌসুমের শুরুতেই এ জেলার মাঠজুড়ে ইরি (বোরো) ধান আবাদের ধুম পড়েছে। বীজতলা থেকে চারা তোলা, চারা লাগানো ও জমি প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ভোরে কনকনে তীব্র শীত উপেক্ষা করেই ছুটছেন মাঠে।

কৃষকরা জানান, সার ও সেচ কাজের জন্য সঠিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে এ মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। কৃষি শ্রমিকের মজুরি, জমির খরচ, সার, কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও ধানের ভালো দাম পাওয়ার ব্যাপারে শঙ্কা রয়েছে তাদের।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার চার উপজেলায় ৩৬ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৮১৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১২ হাজার ৪৬৪ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৯ হাজার ৯৩০ হেক্টর, জীবননগর উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেলায় ১ হাজার ৯০৪ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমি রোপণ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ বছর বোরো উফশি আবাদে জেলার ৮ হাজার ৪০০ জন কৃষককে পাঁচ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার এবং বোরো হাইব্রিড আবাদে ৮ হাজার জন কৃষককে ২ কেজি বীজ প্রণোদনা হিসেবে কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে।


সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের কৃষক আলা উদ্দিন বলেন, ‘আমি এ বছর ২ বিঘা জমিতে ধান লাগাবো। এ জন্য জমি প্রস্তুতের কাজ করছি। জমিতে রোপণ শুরু হয়েছে। গত বছরের মতো এবারো লাভের আশা করছি।’

সদর উপজেলার বেলগাছি গ্রামের কৃষক নিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘জমি প্রস্তুতের পর ধানের চারা রোপণ শুরু করেছি। এই বছর ২ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করবো। সব কিছুরই দাম বাড়ার কারণে শ্রমিকের মজুরিও অনেক বেশি।’

সদর উপজেলার গাইদঘাট গ্রামের কৃষক আসাদুল হক বলেন, ‘আমি এ বছর ৪ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। এ বছর শ্রমিকের মজুরি, সার ও কীটনাশকের দাম বেশি।’

একই এলাকার শামীম হোসেন বলেন, ‘এখন সব মাঠে ধানের চারা রোপণের প্রস্তুতি চলছে। অনেকের চারা লাগানো শেষ। ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বীজতলার চারা হলুদ ও লাল হয়ে গেছে। এরপরও আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো লাভের আশা করছি।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘আমরা লক্ষ্যমাত্রার অধিক বীজতলা প্রস্তুত করেছি, যাতে ধানের চারার কোনো সংকট না হয়। তাই এ বছর বোরো চারার তেমন কোনো সংকট নেই। এ জেলার কৃষকরা এখন বোরো আবাদের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিছু চারার বয়স ১ মাসের বেশিও হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনসহ অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী আমরা।’


তিনি আরও বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। কৃষকদের ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেওয়া এবং চারা রাতের বেলায় ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বীজতলা লাল হয়ে গেলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দিতে বলা হচ্ছে। গত মৌসুমে জেলায় ৩৬ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছিল।’

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন