১৮ মে ২০২৪, শনিবার



টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে ‘গরিবের শীতের মার্কেট’

আব্দুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইল || ১৭ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে ‘গরিবের শীতের মার্কেট’


টাঙ্গাইলে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকায় জমে উঠেছে গড়ম কাপড়ের কেনা-বেচা। সামর্থ্যবানেরা শহরের অভিজাত বিপনি থেকে কেনাকাটা করলেও  কিনতে পারছে না নিম্নবিত্তের মানুষেরা।  তাদের একমাত্র ভরসাস্থল জেলা শহরের কোর্ট চত্বর এলাকায় গড়ে ওঠা অস্থায়ী গরম কাপড়ের দোকান। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এখান থেকে কাপড় কেনেন। নিম্নবিত্তের লোকজন এই মার্কেট থেকে কেনাকাটা করে বলে এর নাম ‘গরিবের শীতের মাকেট’। 

তবে, নামে ‘গরিবের শীতের মার্কেট’ হলেও মধ্যবিত্তরাও এখান থেকে শীতের গরম কাপড় কেনেন। এই মাকেটগুলোতে ১০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত দামের শীতের কাপড় পাওয়া যায়। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন সরকারি জায়গা ও কোর্ট চত্বর এলাকায় গড়ে  উঠেছে কয়েক শত গরম কাপড়ের দোকান। এই এলাকার কয়েকজন দোকানদার ‘দেইখ্যা লন বাইছা লন একদাম ১০, একদাম ২০ একদাম ৫০ এবং একদাম ১০০ টাকা ছন্দের তালে তাল মিলিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছেন।’ আর উৎসুক ক্রেতা-দর্শনার্থীরা তাদের চারপাশ ঘিরে উপভোগ করছেন এ ধরনের অজস্র হাক-ডাক। অনেকেই কম মূল্যে গরম কাপড় কিনছেন। শহর ছাড়াও আশপাশের উপজেলাগুলো থেকে এসব স্থানে গরম কাপড় কিনতে দেখা গেছে। 

গত এক সপ্তাহ ধরে টাঙ্গাইলে তীব্র শীত থাকায় কোর্ট চত্বর এলাকায় গড়ে ওঠা খোলা মাঠের গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রেতাদের বেশি দামে গরমের কাপড় কিনতে হয়েছে। এ সব দোকানে সোয়েটার, ট্র্যাকশুট, বিভিন্ন ধরনের গরম জামা, মোজা, টুপি, বাচ্চাদের কাপড়, প্যান্ট-কোট, চাদর, কম্বল, ট্রাউজারসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের কাপড় বিক্রি হয়। 

আদালত চত্বরে কয়েকজন ক্রেতা বলেন, শহরের মার্কেটগুলোতে দাম বেশি থাকায় কোর্ট চত্বর এলাকায় গড়ে ওঠা গরম কাপড়ের দোকানে এসেছি। এখানে কম দামে বেশ ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়। ছোট থেকে শুরু করে বড়; সব ধরনের গরম কাপড় আমরা স্বল্পমূল্য কিনতে পারছি। 

কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা থেকে কোর্ট চত্বর এলাকায় শীতের কাপড় কিনতে আসেন সামান আলী। তিনি বলেন, ‘কম দামে শীতের কাপড় কেনার জন্য এসেছি। তবে দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে।’ 

কয়েকজন কলেজ ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের মেয়েদের জন্য কম মূল্যে শীতের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। ৮০ টাকা নিয়ে আমরা জামা কিনেছি। শিক্ষার্থী হিসেবে কম দামে শীতের কাপড় কিনতে পেরে আমরা খুশি।’ 

বিক্রেতারা বলেন, ‘এই বছর শীত কম থাকায় আমাদের বিক্রি কম হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন ধরে শীত বাড়ার আমাদের বেচা-কেনা বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে কাপড়ের দাম বেল্ট প্রতি বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম ও ঢাকা আমরা এসব গরমের কাপড় ক্রয় করে থাকি। আশা করছি এবার আমাদের বিক্রি ভালো হবে।’ 

একজন কম্বল বিক্রেতা বলেন, ‘আমার এই দোকানে ১০০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত কম্বল পাওয়া যায়। অনেকেই কম দামে কম্বল কিনছেন।’ 

বিক্রেতা ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘আমি ১০, ২০ ও ৩০ টাকার শীতের কাপড় বিক্রি করছি। শীত কম থাকায় আমাদের বিক্রি কম ছিল। গত কয়েক দিনের শীতে আমাকে বেচা-কেনা বেড়েছে। এবার আমি ৩ লাখ টাকার শীতের কাপড় কিনে এনেছি। আশা করছি বিক্রি ভালোই হবে। এর ওপর আমাদের সংসারের যাবতীয় খরচ নির্ভর করে।’ 

/ঢাকা বিজনেস/




আরো পড়ুন