২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



এক বছরে দেশে পানিতে ডুবে ১৬৭১ শিশুর মৃত্যু

টাঙ্গাইল সংবাদদাতা || ১৬ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৬:৩১ পিএম
এক বছরে দেশে পানিতে ডুবে ১৬৭১ শিশুর মৃত্যু


২০২২ সালে বাংলাদেশে পানিতে ডুবে ১ হাজার ৬৭১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে সমাজ ও স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন। গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫১টি মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্যের ওপর জরিপ করে তারা এই সংখ্যা পেয়েছেন। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। 

মৃত্যুর কারণ হিসেবে মৃগী রোগী, আঘাত জনিত মৃত্যু বা দুর্ঘটনা, সাঁতার না জানা, অসচেতনতা এই চারটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬২.৩৬ শতাংশ ছেলে এবং ৩৭.৬৪ শতাংশ মেয়ে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুবরণ করেছে শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু (৯৬০ জন), যা মোট মৃতের ৫৭.৪৮ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মুবাশ্বির খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম জেলায় (১৩২ জন), দ্বিতীয়তে রয়েছে নেত্রকোনা (৬৭ জন) এরপর যথাক্রমে কক্সবাজার (৬৫ জন), চাঁদপুর (৫৫ জন), সুনামগঞ্জ (৫৪ জন)। 

বক্তব্যে বলা হয়েছে, মোট ৬২.৫ শতাংশ ঘটানার জন্য দায়ী অসচেতনতা। এমনও দু’একটি ঘটনা দেখা গিয়েছে যেখানে বালতি কিংবা পাতিলের পানিতে ডুবেও শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। মা-বাবা বা শিশুর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি যখন কাজে ব্যস্ত থাকেন বা বিশ্রামরত থাকেন, তখনই সিংহ ভাগ শিশুর মৃত্যু ঘটে। বিশেষ করে সকালে কাজের সময় থেকে শুরু করে দুপুরের বিশ্রামের সময় পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শিশু মৃত্যুর রেকর্ড করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাঁতার না জানার কারণে ৫ বছরের উপরে ৩১.০৭ শতাংশ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শিশু মারা গিয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে ২২৮ জন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে জুলাই মাসে ২০০ জন এবং সবচেয়ে কম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফেব্রুয়ারি মাসে ৬৫ জন। যা থেকে বোঝা যায় শীতকালের চেয়ে বর্ষা বা তুলনামূলক গরমের সময় পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। শহর ও গ্রামের তুলনায় গ্রামের শিশুদের নদী, পুকুর বা ডোবায় গোসল করতে গিয়ে বেশি মৃত্যু বরণ করতে দেখা গিয়েছে। শহরের মারা যাওয়া বেশির ভাগ শিশুই পাঁচ বছরের উপরের এবং এবং সিংহ ভাগ সাঁতার না জানার কারণে পানিতে ডুবে মারা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুঈদ হাসান তড়িৎ বলেন, পত্রিকা ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর সংবাদ বিশ্লেষণ করে আমাদের এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অনেক ঘটনাই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়নি, যেগুলো হিসেব করলে মৃতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধ প্রকল্পের সদস্য মির্জা রিয়ান ও আতিয়া আদিবা জারা উপস্থিত ছিলেন।

নোমান/এম



আরো পড়ুন