২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার



এবার ইত্যাদিতে গুরুশিষ্য

বিনোদন ডেস্ক || ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৮:৩৯ এএম
এবার ইত্যাদিতে গুরুশিষ্য


লোকগানের কিংবদন্তি কুদ্দুস বয়াতি। তার গানে খুঁজে পাওয়া যায় মাটি ও মানুষের ঘ্রাণ। বহুকাল ধরে তিনি জনপ্রিয়তা নিয়ে গান করে যাচ্ছেন। তার কাছেই লোকগানের দীক্ষা নেওয়া আরেক নন্দিত শিল্পী ইসলাম উদ্দিন পালাকার। দুজনকে একসঙ্গে খুব একটা দেখা যায় না। তাদের মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা আছে বলেও শোনা যায়। তবে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান সেই দূরত্ব কাটিয়ে একমঞ্চে এনেছে কুদ্দুস বয়াতি ও ইসলাম উদ্দিন পালাকারকে।

দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রত্নসম্পদ, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবান্বিত স্থান, আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা সম্পর্কে জানতে ও জানাতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গিয়ে ধারণ করা হয় বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বটি ধারণ করা হলো নৈসর্গিক শোভার লীলাভূমি নেত্রকোণায়। মঞ্চ নির্মাণ করা হয় এ জেলার বিজয়পুরের সাদামাটির পাহাড়ের সামনে। সবুজ বনানী, পাহাড় আর অসাধারণ নৈসর্গিক দৃশ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সাজানো মঞ্চে ধারণ করা হয়েছে এবারের ইত্যাদি। এ পর্বটিতেই দেখা যাবে লোকগানের গুরুশিষ্যকে। দুই পালাকার একসঙ্গে ওই অঞ্চলের দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদি।

এছাড়া নেত্রকোণা নিয়ে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায়, হানিফ সংকেতের সুরে এবং মেহেদির সংগীতায়োজনে একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন বিজয়পুরের স্থানীয় ২ শতাধিক গারো, হাজং ও বাঙালি নৃত্যশিল্পী। কোরিওগ্রাফি করেছেন মালা মার্থা আরেং, কণ্ঠ দিয়েছেন পুলক, তানজিনা রুমা, মোমিন বিশ্বাস ও নোশিন তাবাসসুম। গানটির চিত্রায়ণ হয়েছে দুর্গাপুরের কিছু মনোরম লোকেশনে।

অন্যদিকে দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী নেত্রকোণা ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে চারজনকে বেছে নেওয়া হয়। নির্বাচিত সেই দর্শকদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক শিল্পী মলয় কুমার গাঙ্গুলি। তার বাড়িও নেত্রকোণা। নির্বাচিত দর্শকের সঙ্গে তিনি তার নিজের গাওয়া চারটি জনপ্রিয় গানের অংশবিশেষে কণ্ঠ ধরেছেন।

শেকড়সন্ধানী ইত্যাদি বরাবরই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচারবিমুখ, জনকল্যাণে নিবেদিত মানুষকে তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অচেনা-অজানা বিষয় ও তথ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন প্রচার করে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি হৃদয়ছোঁয়া প্রতিবেদন। রয়েছে পাহাড়-নদীর নান্দনিক স্বপ্নিল সৌন্দর্যে ঘেরা নেত্রকোণার ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিভিন্ন প্রত্ননিদর্শন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন এবং কীর্তিমান ব্যক্তিদের ওপর তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ যাত্রী, গার্ড ও চালকের কাছে এক ভয়ংকর আতঙ্ক। এ বিষয়ে প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছেন একদল তরুণ-তরুণী। এবারের অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়েছে এই তরুণদের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম। রয়েছে মৌলভীবাজারের মানবিক মানুষ অমলেন্দু কুমার দাশের ওপর একটি মানবিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদিতেই প্রথম পরিবেশিত হয় বিশ্বের বিস্ময়কর বিষয়ের ওপর বিদেশি প্রতিবেদন। এবারের পর্বে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অবস্থিত গিয়ংবকগাং প্রাসাদের ওপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন। এ ছাড়া নেত্রকোণার মঞ্চে যথারীতি সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে থাকছে নানি-নাতির কথার মাতামাতি। নিয়মিত পর্বসহ রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশকিছু সরস অথচ তীক্ষ্ণ নাট্যাংশ। টেলিভিশন প্রযুক্তির উন্নয়ন বনাম অনুষ্ঠানের মানে অবনমন, ইন্টারনেট আসক্তির নেতিবাচক প্রভাব, ভুলে ভরা জীবন, সবিনয়ে আমন্ত্রণ-ক্রোধে প্রত্যাখ্যান, ভোট ভিখারি, ইউটিউবে টাকা কামানোর ধান্দা, সেলফিভাইরাস, ননসেন্স মানুষের রাস্তায় হাঁটার লাইসেন্স, সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী, জীবনের ওপর ফাইলের চাপসহ বিভিন্ন বিষয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।

এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন সোলায়মান খোকা, শেলী আহসান, সুভাশিস ভৌমিক, আঞ্জুমান আরা শিরিন, আবদুল্লাহ রানা, জিল্লুর রহমান, আমিন আজাদ, আনোয়ার শাহী, নজরুল ইসলাম, জামিল হোসেন, বিলু বড়ুয়া, জাহিদ শিকদার, মুকিত জাকারিয়া, শাহেদ আলী, আনন্দ খালেদ, সুজাত শিমুল, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি, সিয়াম নাসির, সাবরিনা নিসা, সাদিয়া তানজিন, সাজ্জাদ সাজু, সুবর্ণা মজুমদার, সিলভিয়া কুইয়া, মোনালিসা দীপা, মতিউর রহমান, দেবাশিস মিঠু, বেলাল আহমেদ মুরাদসহ অনেকে। বরাবরের মতো এবারও ইত্যাদির শিল্পনির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। যথারীতি পরিচালকের সহকারী হিসেবে ছিলেন রানা সরকার ও মোহাম্মদ মামুন।

২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে একযোগে প্রচার হবে গণমানুষের এই প্রিয় অনুষ্ঠান। বরাবরের মতো ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের সৌজন্যে এটি নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

ঢাকা বিজনেস/এন



আরো পড়ুন