২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার



যে দিকে তাকাই, দেখি হলুদের বাহার

মো. আজহার উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া || ০৮ জানুয়ারী, ২০২৩, ১২:০১ পিএম
যে দিকে তাকাই, দেখি হলুদের বাহার


ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মাঠজুড়ে যেন হলুদের সমাহার। তাকালেই দুই চোখে দেখা যায় হলুদ আর হলুদ। যেন অলঙ্কারে সেজেছে প্রকৃতি। বাতাসে হেলে-দুলে সরিষা ফুলগুলো ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। আর মৌমাছিরা দল বেঁধে সেই ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছে। এবার সরিষার চাষ বেড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। অতি বৃষ্টি না হওয়াই এখন পর্যন্ত ক্ষেতের অবস্থা ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। 

চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর, নবীনগর, বিজয়নগর, আখাউড়া, আশুগঞ্জ, সরাইল, নাসিরনগর, বাঞ্ছারামপুরসহ ৯ উপজেলায় সরিষার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। চাষ বাড়ানোর পাশাপাশি বেড়েছে নতুন জাতের সম্প্রসারণও। এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৬০০ হেক্টর। নতুন জাতের বিনা-৯ ও বারি-১৪, ১৭ ও ১৮ জাতের সরিষা। তৈল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমন মৌসুমের শুরু থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরিষার আবাদ কার্যক্রম শুরু করে কৃষি বিভাগ। 

একাধিক কৃষক জানান, গত কয়েক বছর ধরে বৃষ্টিপাত হওয়ায় সরিষার অনেক ক্ষতি হয়েছিল। সার ও প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ কিছুটা বাড়লেও ফলন এবার ভালো হয়েছে। এখানে যেদিকেই তাকাই দেখি শুধু হলুদের বাহার। এবার প্রতি কানি (৩৯ শতাংশ) জমিতে ৩/৪ মণ সরিষা পাওয়ার আশা করছি। সরিষা জমিতে মধু সংগ্রহের জন্য ভিড় করছে মৌমাছি। 



সদর উপজেলার উত্তর সুহিলপুর গ্রামের কৃষক ফারুক মিয়া বলেন, ‘সরিষা চাষে দ্বিগুণ লাভ। সরিষার ফুল ও পাতা ঝরে জমিতে জৈব সার তৈরি হয়। সে কারণে জমিতে পরবর্তী ধানের ফলনও ভালো হয়।’

সাদেকপুরে কৃষক আবদুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘গত বছর আমি এক কানি (৩০ শতক) জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম, এবার দেড় কানি জমিতে সরিষা চাষ করেছি।’

গজারিয়া গ্রামের কৃষক সোহেল মিয়া বলেন, ‘কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। এক কানি (৩০ শতক) জমিতে সরিষা চাষ করে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৪-৫ হাজার টাকা লাভ হবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, ‘ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে এই বছর নতুন জাতের সম্প্রসারণের পাশাপাশি প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর অতিরিক্ত জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এতে প্রায় ১৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হবে। সরিষার চাষ বাড়াতে জন-প্রতিনিধিদের নিয়ে কৃষক সমাবেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ২২ হাজার কৃষককে প্রতিবিঘা জমির জন্য প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ-সার দেওয়া হয়েছে।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন