সুন্দরবনের দুবলার চরে (২৬ অক্টোবর) শুরু হয়েছে শুঁটকি মৌসুম। ৫ মাস ধরে চলা এই শুঁটকি মৌসুম চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে পাস নিয়ে উপকূলের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ২০ হাজার জেলে-মহাজন এখন অবস্থান করছেন বাগেরহাটের সুন্দরবনের দুবলারচরে। জেলেদের তৈরি শুঁটকি থেকে এবার ৪ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, জেলেরা নৌপথে তাদের থাকার অস্থায়ী ঘর, মাছ শুকানো মাচা ও মাছ সংরক্ষণের গোলা তৈরিসহ খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। এবার শুঁটকি মৌসুমে দুবলার চরে জেলেদের জন্য ৯৮৫টি ঘর ও ৬৬টি ডিপোর অনুমোদন দিয়েছে সুন্দরবন বিভাগ। প্রতি বছর শুঁটকি আহরণ মৌসুমে বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের দুবলারচর, আলোরকোল, নারকেল বাড়ীয়া, শেলারচর ও মেহের আলীর চরসহ ১০টি চরে অস্থায়ী পল্লী তৈরি করে প্রায় ২০ হাজার জেলে-মহাজন শুটকি আহরণ করে থাকে।
সুন্দরবন বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের দুবলারচরসহ বিভিন্ন চরে গত মৌসুমে ৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ১ নভেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত শুঁটকি আহরণে নিয়োজিত জেলে ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই রাজস্ব সংগ্রহ করেছে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ। যা গত ২০২০-২১ অর্থ বছরের থেকে প্রায় এক কোটি টাকা বেশি।
২০২০-২১ সালে এই রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। তবে মৌসুমের শুরুতে কয়েক দফা ঝড় বৃষ্টিতে মাছ নষ্ট না হলে রাজস্বের পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লীর জেলেরা কমবেশি ৩০ প্রকার জাল ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাছাই করে রোদে শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানির জন্য উপযোগী করে প্যাকেটজাত করে থাকেন।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘এবারের শুঁটকি মৌসুমে দুবলারচরে জেলেদের জন্য ৯৮৫টি ঘর ও ৬৬টি ডিপো তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মৌসুমজুড়ে দুবলারচরে প্রায় ২০ হাজার জেলের সমাগম থাকবে। আর এই জেলেদের আহরিত শুঁটকি থেকে ৪ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে সুন্দরবনের শুঁটকি মৌসুম।
ঢাকা বিজনেস/এম